এবার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের ‘ওয়েইজমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ ভবনে। বৃহস্পতিবার ভোরে রেহোভট শহরে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে হামলায় কেউ নিহত না হলেও ‘বিজ্ঞান রত্ন’ খ্যাত ভবনটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক গবেষণাগার।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, হামলায় ওই প্রতিষ্ঠানের জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের উচ্চতর গবেষণার কয়েক বছরের কাজ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ইসরায়েলি বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
মলিকিউলার সেল বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ওরেন শুলডিনারের ল্যাব ওই হামলায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘এটি ইরানের নৈতিক বিজয়। তারা ইসরায়েলের বিজ্ঞানমূল্যকে আঘাত করতে পেরেছে।’
গত বছর ইসরায়েল দাবি করে, ইরান ওয়েইজমান ইনস্টিটিউটের এক পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। পূর্ব জেরুজালেমের কয়েকজন ফিলিস্তিনি সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারও হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইরান-বিশেষজ্ঞ ইয়োয়েল গুজানস্কি মনে করেন, ইরান ইচ্ছাকৃতভাবেই এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
এই হামলার মাধ্যমে ইরান বার্তা দিচ্ছে—‘তোমরা আমাদের বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছ, এখন আমরা তোমাদের বৈজ্ঞানিক শক্তিকেই আঘাত করছি।’
এদিকে, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযান চালাবে কিনা, সেই বিষয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, ‘বাস্তব এই যে, অদূর ভবিষ্যতে (ইরানের সঙ্গে) বোঝাপড়ায় আসার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমি সেই পথে হাঁটব কি না, সেই বিষয়ে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।’
আরও জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার পথ এখনই বন্ধ করে দিতে চান না প্রেসিডেন্ট। তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সায় নেই।প্রেসিডেন্ট কূটনৈতিক সমাধানই চান। তিনি শান্তিপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সেরা একজন। যদি কূটনৈতিক সমাধানের কোনও পথ থাকে, অবশ্যই প্রেসিডেন্ট সেই পথ ধরে হাঁটবেন।’
বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ নিউজ়’-এর একটি প্রতিবেদনে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, চলতি সপ্তাহের শেষেই ইরানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই ইরানকে আক্রমণ করবে কি না। জবাবে ধোঁয়াশা রেখে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার না-ও করতে পারি!’
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে নামবে কি না, তা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে বলে বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন ইসরায়েল সরকারের এক কর্তা।