ড. তৌফিক এম. সেরাজের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার। বাংলাদেশের আবাসন শিল্পে এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখা এই নগর পরিকল্পনাবিদ ২০১৯ সালের এই দিনে ঢাকা থেকে বার্সেলোনাগামী পথে দোহা অভিমুখী একটি বিমানে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
ড. সেরাজ ছিলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শেলটেক-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ১৯৮৮ সালে তিনি বুয়েটের সহপাঠী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কুতুবউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মিলে শেলটেক প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তপন চৌধুরী ও স্যামুয়েল এস. চৌধুরী এই প্রতিষ্ঠানে অংশীদার হন। তার গতিশীল নেতৃত্বে শেলটেক শুধু আবাসন নির্মাণেই সীমাবদ্ধ না থেকে পরামর্শসেবা ও সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যাপক প্রসার ঘটায়।
আবাসন খাতের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে তিনি প্রথম সারির ভূমিকা রাখেন। তিনি ছিলেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। দীর্ঘ পাঁচ বছর সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে তিনি রিহ্যাবকে একটি সক্রিয় এবং প্রভাবশালী সংগঠনে পরিণত করেন।
ড. তৌফিক সেরাজ ছিলেন একজন স্বীকৃত নগর পরিকল্পনাবিদও। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। এরপর কমনওয়েলথ স্কলার হিসেবে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুল থেকে সিভিক ডিজাইনে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন এবং টেকসই নগরায়ন ও পরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ড. তৌফিক এম. সেরাজকে স্মরণ করা হয় একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী নগরবিদ-যিনি একাধারে গবেষণার গভীরতা ও ব্যবসায়িক প্রজ্ঞার সফল সংমিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা এই স্বপ্নবান মানুষটিকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি।