ইসরায়েলের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে ইরান রাতভর দুই দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার সকালে আবারো ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা শুরু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলায় বেশ কিছু হতাহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিবিসি নিজস্ব সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ইরানের আঘাতের পর পাল্টা ইরানেও দেশটির পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার দাবি করেছে ইসরায়েল। হামলা হয়েছে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তর এলাকাতেও। তেল আবিবের দক্ষিণে বাত ইয়ামে ইরানের হামলায় ৩ জন নিহত ও অন্তত একশ জন আহত হয়েছে। যদিও এ তথ্য বিবিসি এখনো যাচাই করে দেখতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর তামারায় ইরানের হামলায় ৫ জন নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে।
ওদিকে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ বলেছে, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে বারটার দিকে তারা তেহরানে দেশটির পরমাণু কর্মসূচির সাথে সম্পর্কিত ভবনে হামলা করেছে, যার মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনও রয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানিয়েছে, ইসরায়েলে বড় ধরনের ড্রোন হামলা করেছে ইরান। মধ্য ইসরায়েলে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইরানের তেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তেহরানে শাহরান তেল মজুদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েল হামলা করেছে, তবে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতভর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের হাইফা তেল শোধনাগারে আগুন জ্বলছে।
এর আগে গতকাল হাইফা ও তেল আবিব লক্ষ্য করে একশর বেশী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছিলো ইরানের সরকারি টেলিভিশন।
ইসরায়েলের সংবাদ মাধ্যম বলছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় হাইফায় একটি আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫ জন নিহত হয়েছে। তেল আবিবের কাছে আরেকদফা হামলায় ৬০ বছর বয়সী একজন নারীর নিহত হবার তথ্য দিয়েছে ইসরায়েলি জরুরি সার্ভিস। এছাড়া ওই এলাকায় আরও ২০ জন আহত হয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড বা আইআরজিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, রাতে ইসরায়েলের একটি জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে তারা। এটি যুদ্ধ বিমানের তেল উৎপাদন ও জ্বালানি সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
বিবৃতিতে তারা জানায়, ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রাখলে ইরান হামলা আরও জোরদার করবে। এছাড়া ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের তিনটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও দশটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড এর সাথে সম্পর্কিত তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তেহরানে ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্য ছিলো দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
নোবানিয়াদ এলাকায় মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরের একটি ভবনের সামান্য ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এছাড়া আরেক হামলায় ওই মন্ত্রণালয়ের অর্গানাইজেশন অফ ডিফেন্স ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চও আক্রান্ত হয়েছে।
ওদিকে ইরানের হামলা জোরদার হওয়ার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রীসভার বৈঠক শুরু করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া দেশটির কিছু এলাকায় লোকজনকে বাইরে বের হবার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।