এক হাজার ৮৫০টি গুমের অভিযোগের মধ্যে ২৫৩টির ‘অকাট্য প্রমাণ’ পেয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। বাকি অভিযোগগুলোর তদন্ত চলছে।
বৃহস্পতিবার গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘১৮৫০টি অভিযোগ বিশ্লেষণের মধ্যে থেকে ২৫৩ জন গুমের শিকার ব্যক্তির তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতে স্পষ্ট হয় যে বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন এবং শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে। যার ভুক্তভোগী ছিল মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি পেশাজীবী।’
‘এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করেছে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে, এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দিয়েছে।’
গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘কমিশনে দাখিলকৃত ৮১ শতাংশ অভিযোগ জীবিত ভিক্টিমদের হলেও, ১৯ শতাংশ অভিযোগ ফেরত না আসা ভিক্টিমদের। গুম থেকে ফিরে না আসা ১২ জনের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী তা প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশিদের গুমের সাথে অনেক ভারতীয়রা জড়িত। বর্তমান সরকারের ভেতরে যারা গুমের সাথে জড়িত তাদেরকে শান্তির আওতায় আনা হবে।’
কমিশনে অন্য সদস্যরা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গুমের জন্যে সেনাবাহিনী অভিযুক্ত না। তবে যেসব কর্মকর্তা অন্যান্য বাহিনীতে ছিল তারা জড়িত ছিল। এখনও নিখোঁজ ১৩১ জনের তালিকা পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তারা।