জামায়াতে ইসলামীর ডাকা ‘জাতীয় মহাসমাবেশ’কে সফল করতে সকাল থেকেই দলটির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের খণ্ড খণ্ড মিছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী হয়েছে। দুপুর ২টায় শুরু হবে মূল আনুষ্ঠানিকতা। তবে ভোর থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের দলে দলে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। অনেকেই শুক্রবার রাতেই সমাবেশস্থলে পৌঁছে গেছেন।
সকাল ১০টায় কুরআন তিলাওয়াত, হামদ ও নাত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগেই কার্যত পূর্ণ হয়ে গেছে সমাবেশস্থল। আয়োজকদের দাবি, এই সমাবেশের মাধ্যমে তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি উপস্থাপন করবেন।
সরেজমিনে রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইল, ফার্মগেট, মৎস্য ভবন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় দেখা গেছে, পাঞ্জাবি-পায়জামা, সাদা গেঞ্জি এবং দলীয় প্রতীকসংবলিত টি-শার্ট পরিহিত হাজার হাজার কর্মী ও সমর্থক মিছিল আকারে সোহরাওয়ার্দীর দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। কেউ কেউ জাতীয় পতাকা, কেউবা জামায়াতের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে এগোচ্ছেন।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে কর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা নিজ খরচে অংশ নিচ্ছেন এই মহাসমাবেশে। কুমিল্লা, পঞ্চগড়, ঝালকাঠি, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চ, বাস ও ট্রেনযোগে ঢাকায় এসেছেন তারা। লঞ্চ ও বাসে আগতদের অনেকে জানান, তারা শুকনো খাবার, পানি ও জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন এবং কেউই সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাতা বা খরচ নিয়ে আসেননি।
জানা গেছে, মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১০ হাজার বাস এবং ৩০টি লঞ্চ ভাড়া করা হয়েছে। রেলপথেও কর্মীদের আনতে ভাড়া করা হয়েছে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন। সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে দলটি।
সমাবেশস্থলে নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে ছয় হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে জামায়াত। আছে ওজু ও টয়লেটের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, মেডিকেল বুথ এবং নামাজের স্থানও।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, এই সমাবেশের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক সংস্কার, নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং দলীয় নেতাদের মুক্তির দাবিসহ সাত দফা দাবি জনসমক্ষে আনবে। সভাপতিত্ব করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। সমাবেশে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিভাগও নিয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। জামায়াতের এই মহাসমাবেশকে ঘিরে নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এক ধরনের রাজনৈতিক উত্তাপ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ ও বিতর্কের মাঝে ৭ দফা দাবিতে ঢাকায় বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী।