কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টিকর্ম দেখে নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন দেখে অনেক তরুণ। তাই তাকে ভাবা হয় উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের বাতিঘর। তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ বিভিন্ন উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ও কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছে। এবার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি’তে উন্মুক্ত হলো প্রসূন রহমান পরিচালিত ছবিটি।
২ মে সত্যজিৎ রায়ের ১০৪তম জন্মশতবার্ষিকী। ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ মুক্তির মাধ্যমে বিশেষ এই দিনে তাঁকে স্মরণ করা হলো। চরকির সাবস্ক্রাইবার নন এমন দর্শকরা ৩৫ টাকা দিয়ে উপভোগ করতে পারবেন ছবিটি। এজন্য মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারে চরকি অ্যাপ ইনস্টল করে ফোন নম্বর অথবা ইমেইল ঠিকানার মাধ্যমে লগ-ইন করতে হবে। ‘বাই টিকেট’ অপশনে নতুবা হোমপেজে থাকা ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ ছবিতে ক্লিক করলেই চলে আসবে পেমেন্ট অপশন। এরপর পছন্দের পদ্ধতিতে টাকা জমা দিয়ে দেখা যাবে। একই পদ্ধতিতে ভারতে অবস্থানরত দর্শকদের ৩৫ রুপি ও অন্যান্য দেশের দর্শকদের ১ দশমিক ৯৯ ডলার গুনতে হবে। চরকির সাবস্ক্রাইবাররা নিয়মিত পদ্ধতিতেই ছবিটি দেখতে পারবেন।

চরকির হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড বিজনেস ডেভলপমেন্ট ফয়সাল রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি সবার দেখার সুবিধার্থে ট্রানজেকশনাল ভিডিও অন ডিমান্ড (টিভিওডি) পদ্ধতিতে মুক্তি পেয়েছে।

চরকিতে ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ ছবির মুক্তি প্রসঙ্গে প্রসূন রহমান বলেন, ‘বেশিসংখ্যক দর্শকের কাছে যেন ছবিটি পৌঁছায়, সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া। সত্যজিৎ যেমন অসংখ্য তরুণদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তেমনভাবেই এই ছবি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার আশা। সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ট্রিবিউট হিসেবে নির্মিত হলেও এটি নির্দিষ্ট কোনো সময়ের চলচ্চিত্র নয়। সত্যজিতকে সঙ্গী করে সাহিত্য, সিনেমা ও জীবনঘনিষ্ঠ শিল্পের প্রতি ভালোবাসা জানানোর চলচ্চিত্র এটি। শিল্পের অনুষঙ্গে দিনযাপনের যেকোনো উপলক্ষেই এর প্রদর্শন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।’
নির্মাতা প্রসূন রহমান নিজস্ব অর্থায়নে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি তৈরি করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা ছিল বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। সেখানকার মসূয়া’য় সত্যজিৎ রায়ের দাদা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর বাড়িসহ আরো দুটি জায়গা ও পুরান ঢাকার একটি বাড়িতে ছবিটির শুটিং হয়েছে।

‘প্রিয় সত্যজিৎ’-এর কাহিনি তিনটি ভিন্ন সময়ের তিন জন চলচ্চিত্র নির্মাতাকে ঘিরে আবর্তিত। প্রথম জন সত্যজিৎ রায় নিজে। যিনি উপস্থিত না থেকেও বিরাজমান। অন্য দুই জন পরবর্তী দুই প্রজন্মের। তাদের মধ্যে প্রবীণ নির্মাতা আসিফ মাহমুদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রয়াত আহমেদ রুবেল। নবীন নির্মাতা অপরাজিতার ভূমিকায় আছেন মৌটুসী বিশ্বাস। এছাড়াও কয়েকটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন পংকজ মজুমদার, সাইদ বাবু, সঙ্গীতা চৌধুরী, লাবন্য চৌধুরী, এহসানুল হক, নুসরাত জাহান নদী ও আবীর।