শেষ মিনিটে তৃষ্ণারানীর গোলে নাটকীয় জয় বাংলাদেশের

টাইমস স্পোর্টস
2 Min Read
নেপালের জালে বল জড়ানোর পর উল্লাসিত বাংলাদেশ দল। ছবি: বাফুফে

বৃষ্টি ভেজা কর্দমাক্ত মাঠ, বিপর্যস্ত হাই লাইন আর একের পর এক নেপালি আক্রমণ—সব বাধা পেরিয়ে তৃষ্ণারানী সরকারের অতিরিক্ত সময়ের এক গোলেই শেষ হাসি হাসলো বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশীয় ফুটবলে এই ম্যাচটিই হয়তো তুলে ধরলো কতটা উন্মাদনায় ভরা হতে পারে নারীদের একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট।

বঙ্গবন্ধু সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত সূচনা করেছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচের প্রথমার্ধে দারুণ নিয়ন্ত্রিত আক্রমণ আর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় গোল করে এগিয়ে যায় দল। শানতিকা দারুণ এক ক্রস দেন বক্সে, যা নিখুঁত ফিনিশে পরিণত করেন সাগরিকা। গোলের পর বাংলাদেশের মেয়েরা কিছুটা দাপট বজায় রেখেই প্রথমার্ধ শেষ করে।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে বদলে যায় দৃশ্যপট। ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আনিশা রায় গোল করে নেপালকে ফিরিয়ে আনেন ম্যাচে। এরপর ৮০ মিনিটে বাংলাদেশের তৃষ্ণারানী সরকারের একটি সহজ সুযোগ মিস করে গেলে উল্টো চাপে পড়ে যায় লাল-সবুজের দল।

৮২ মিনিটে নেপালের আরেকটি আক্রমণ বারে লেগে ফিরে এলেও ৮৬ মিনিটে মিনা দেউয়া বাংলাদেশ দলের হাই লাইন ভেঙে সমতায় ফেরান নেপালকে। বৃষ্টির কারণে কর্দমাক্ত মাঠে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ একেবারে স্থবির হয়ে পড়ে। ম্যাচের শেষ ২০ মিনিট পুরোপুরি দখলে নেয় নেপাল। অতিরিক্ত সাত মিনিটেও বাংলাদেশের মেয়েরা হিমশিম খায় নেপালের টানা আক্রমণে।

তবুও ঠিক যখন সবাই ভেবেছিল, হয়তো একটা ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে, তখনই নাটকের চূড়ান্ত মোড়। ৯০+১২ মিনিটে তৃষ্ণারানী সরকার গোল করে দিলেন সেই স্বপ্নের মুহূর্ত—যে মুহূর্তে আবারও নিজেদের আধিপত্য ঘোষণা করলো বাংলাদেশের মেয়েরা।

ম্যাচের নির্ধারিত অতিরিক্ত সময় ছিল ৭ মিনিট, কিন্তু বাংলাদেশের গোলকিপার স্বর্ণারানী চোট পেয়ে কিছু সময় মাঠের বাইরে থাকায় খেলা খানিকটা থেমে যায়। আর সেই সময়ই কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ তুলে নেয় মূল্যবান তিন পয়েন্ট।

প্রথমার্ধে নিয়ন্ত্রিত খেলা এবং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও আধিপত্য বজায় রাখা বাংলাদেশের জন্য এই জয় শুধু একটি ম্যাচ জয় নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের জয়, হার না মানা মানসিকতার জয়। একই সঙ্গে এটা প্রমাণ করলো—দলের রিজার্ভ শক্তি, সাহস আর শেষ মুহূর্তে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ক্ষমতা কতটা পাকা হচ্ছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *