সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিন বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বুধবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
দুদকের চিঠিতে শেখ হাসিনাকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলামের সই করা এ চিঠি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির সুধাসদন ও গোপালগঞ্জের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। এদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সাবেক সচিব মোকাম্মেল হোসেনকে তলব করেছে দুদক।
দুদক কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুসারে, শেখ হাসিনা দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে মুখোমুখি না হলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারাবেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালজালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত পনের বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত অন্যদের ডেকেছে দুদক।
দেশের তিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২৭ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা করে দুদক। এসব মামলার আসামির তালিকায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মুহিবুল হক ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানের নামও এসেছে।
গতবছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর দুর্নীতি, হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মামলা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘কমন আসামি’। পুলিশের তালিকায় তিনি এখন পলাতক। ইতিপূর্বে কয়েকটি মামলায় সমন জারি হলেও তাকে হাজির করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় দুদকের তলবে শেখ হাসিনা অথবা তার আইনজীবির হাজির হওয়ার সম্ভবনা কম বলেই মনে করছেন কর্মকর্তারা। সেক্ষেত্রে দুদক তাকে পলাতক দেখিয়ে তদন্তকাজ এগিয়ে নেবে বলে কর্মকর্তারা জানান।