অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
শাওনের ‘সৎ মা’ দাবি করা নিশি ইসলাম নামে এক নারীর মামলার সূত্রে এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্য ১০ আসামির মধ্যে রয়েছেন মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী, বোন মাহিন আফরোজ শিঞ্জন, সেঁজুতি, সাব্বির, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সাবেক এডিসি নাজমুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপপরিদর্শক শাহ আলম এবং মোখলেছুর রহমান মিল্টন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি পারভেজ সুমন জানান, মামলার আসামিদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও শাহ আলম জামিনে আছেন। অপর ১০ আসামি পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গত ২২ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার মামলার দিন ধার্য ছিল। মামলা চলমান থাকাবস্থায় আসামিরা যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন এজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবি মোহাম্মদ পিন্টু আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আগামী ১ জুলাই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী পূর্বের স্ত্রীর কথা গোপন রেখে নিশি ইসলামকে বিয়ে করেন। তিনি আগের সংসারে থাকা একটি পুত্র ও তিনটি কন্যার কথাও নিশির কাছে গোপন রাখেন। পরে মোহাম্মদ আলী এসব প্রতারণার কথা স্বীকার করেন নিশির কাছে।
বিয়ের ৭ দিন পর নিশির বাসায় হাজির হয়ে শাওনের বোন শিঞ্জন ও তার স্বামী সাব্বির বিয়ের কথা গোপন রাখার জন্য বলেন। এরপর ৪ মার্চ মো. আলী নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বাদীকে গুলশানের বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। সেখানে গেলে নিশিকে আসামিরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। পরদিন শাওন ও এডিসি নাজমুলসহ অন্য আসামিরা নিশির বাড়িতে ঢুকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শাওন তাকে বেধড়ক মারধর করেন।
গতবছর ২৪ এপ্রিল মামলার বাদী নিশি ইসলামকে ডিবি অফিসে ডেকে নেন পরিদর্শক শাহ জালাল। সেখানে শাওনসহ অন্যান্য আসামিরা নিশিকে মারধর করেন বলে এজাহারে বলা হয়েছে। তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বাড্ডা থানার ওসিকে নিশির বিরুদ্ধে মামলা নিতে বলেন। পরে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। তাকে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে কারাগারে রাখা হয়।
গত ১৩ মার্চ নিশি ইসলাম ‘হত্যাচেষ্টা ও মারধরের’ অভিযোগে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। সেখানে শাওন-হারুনসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়।