আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের জাজিরায় তুমুল বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় বিরোধে শনিবার সকাল নয়টার দিকে উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ব্যাপক বোমাবাজি হয়।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বোমাবাজির কথা স্বীকার করলে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বিস্তারিত তথ্য পেলে তখন পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এলাকাবাসী জানান, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জলিল মাদবরের মধ্যে পুরনো বিরোধ আছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে।শনিবার সকালে দূর্বাডাঙ্গা এলাকায় কথা কাটাকাটির পর উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন মাঠের মধ্যে শতাধিক হাত বোমার বিস্ফোরণ হয়। পরে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় আহতরা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। মারাত্মক জখম মারুফ মাল নামের এক যুবককে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
দুপক্ষের সংঘর্ষ এবং হাতবোমা বিস্ফোরণের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এটি সিনেমার শ্যুটিং বলে মনে করেন। তবে ঘটনাস্থল চিহ্নিত হতেই এলাকাবাসী সংঘর্ষ ও বোমাবাজির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, একটি খোলা মাঠে উভয় পক্ষের লোক দেশীয় অস্ত্রসহ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে অনেকের হাতে বালতি দেখা যায়। তাদের মধ্যে অনেককে হেলমেট পরিহিত দেখা যায়। এক পর্যায়ে বালতি থেকে হাতবোমা নিক্ষেপ করা শুরু করলে তা বিস্ফোরিত হয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়।
এলাকার লোকজন সংঘর্ষ বোমাবাজির ঘটনায় বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ওরফে বোমা কুদ্দুস এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জলিল মাদবরের সমর্থকদের দায়ী করেছেন। প্রায় এক যুগ ধরে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। কুদ্দুস বেপারী সর্বশেষ নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হন। তখন জলিল মাদবর পরাজিত হন। তারা দুজনেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নির্বাচনের আগে ও পরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে মাঝেমাঝেই সংঘর্ষ হয়। তখন তারা বোমা ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর পাশাপাশি শক্তির মহড়া দেয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিলাসপুরে টহল দিচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।