রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় সংঘটিত উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিবির অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “হেফাজতে থাকা সবাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”শুক্রবার তাদেরকে আদালতে তোলা হবে বলেও জানানো হয়।
ডিআরইউর শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ‘মঞ্চ ৭১’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি কামাল হোসেনের। তবে তিনি এবং আরেক আয়োজক আইনজীবী জেড আই খান পান্নার দেরিতে পৌঁছানোর কারণে সভা শুরুর সময় বিলম্ব ঘটে।
সভায় অংশ নেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, লেখক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মাহবুব কামাল, সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতীক।
বক্তব্যে অধ্যাপক কার্জন বলেন, ‘একটি শক্তি মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরকে নতুন প্রজন্মের বিভাজনের মুখে ঠেলে দিতে চায়। তারা দেশের সংবিধানকে অস্বীকার করে বাংলাদেশকেই অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এর মূলে জামায়াত-শিবির এবং কিছু বিভ্রান্ত বামপন্থী তাত্ত্বিকও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।’
তার বক্তব্য শেষ হতেই একদল যুবক স্লোগান দিতে দিতে সভাস্থলে প্রবেশ করে। তারা নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে পরিচিতি দেয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে হলে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে এবং আয়োজকদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে তারা লতিফ সিদ্দিকীকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করে এবং তাকে হজ বিষয়ে কটূক্তিকারী আখ্যা দিয়ে মঞ্চের দিকে ধেয়ে যায়। গোলমালকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে অংশগ্রহণকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
একপর্যায়ে অতিথিদের অনেকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারলেও লতিফ সিদ্দিকী ও কার্জনকে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদেরসহ অন্তত ১০ জনকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।