দুদিন আগেই টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির রজতজয়ন্তী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ। একইদিনে মিরপুরে যেখানে ছিল আনন্দের ছোঁয়া, কলম্বোতে নাজমুল হোসেন শান্তরা ধুঁকছিলেন শ্রীলংকার বিপক্ষে। ২৫ বছর পরেও দেখা মিলল লাল বলের ক্রিকেটে শুরুর দিনগুলোর বাংলাদেশ দলকে। যে দলের ম্যাচ জেতার চেয়ে টিকে থাকাতেই নৈতিক জয়, ইনিংস ব্যবধানের হার এড়াতে পারলেও যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। ম্যাচ বাঁচানো দূরাশা, ইনিংস হারও এড়াতে পারলেন না লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্তরা! কলম্বোতে দ্বিতীয় টেস্টে ১৩৩ রানে অল আউট হয়ে এক ইনিংস ও ৭৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ তে সিরিজটাও হারালেন শান্তরা।
তৃতীয় দিন শ্রীলংকার ২১১ রানের লিডের জবাবে ৬ উইকেটে ১১৫ রান তুলে তৃতীয় দিন মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ জেতার আশা কার্যত শেষ হয়ে যায় এর আগেই। ৯৫ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দল সেই রানটা টপকে যাবে, এই আশাটা গতকাল পর্যন্তও করা যাচ্ছিল চতুর্থ দিন লিটন দাস শুরু করবেন ভেবে। অবশ্য সেই লিটনকে দিয়েই শুরু চতুর্থ দিনের সকালের ধসের। সকালে শ্রীলংকার স্পিনারদের ৩০ মিনিটও লাগল না বাংলাদেশের বাকি ৪ উইকেট তুলে নিতে। ৩৪ বলের মধ্যে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেন প্রবাথ জয়সূরিয়া আর শেষ উইকেটটা নেন থারিন্দু রথনায়েকে।
শ্রীলংকার বিপক্ষে নবম বারের মতো ইনিংস ব্যবধানে হারা টেস্টটা বাংলাদেশের হাত ফসকেছে মূলত দ্বিতীয় ইনিংসে। তখনও আদর্শ ব্যাটিং উইকেটের মতোই আচরণ ছিল সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবের। মরা উইকেটের সেই ফায়দা পুরোটাই তুলেছেন শ্রীলংকান ব্যাটারররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২২৭ রানের জবাবে পাথুম নিসাঙ্কার সেঞ্চুরি, দীনেশ চান্দিমালের ৯৩ ও কামিন্দু মেন্ডিসের ৮৪ রানের ইনিংসে ৪৫৮-তে থামে লংকানরা।
২১১ রানের লিডও হয়তো এত দূরের পথ বাংলাদেশের মনে হতো না, যদি না তৃতীয় দিন থেকে কলম্বোর উইকেটে স্পিন ধরা শুরু করত। সেই মাশুলটাই দিল বাংলাদেশ। পুরো সিরিজ জুড়ে নিষ্প্রভ থাকা বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জ্বলে উঠলেন তৃতীয় ইনিংসে। ইনিংসে ১২তম বার নিলেন পাঁচ উইকেট। তৃতীয়দিন দুই উইকেট নেয়া এই স্পিনার চতুর্থ দিন নিজের তৃতীয় বলেই নিলেন লিটন দাসের উইকেট। অফস্টাম্পের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বলে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। তার ব্যাট থেকে ৪৩ বলে এসেছে ১৪ রানের ইনিংস। পরপর নিজের দুই ওভারে দুই টেইলএন্ডার নাঈম হাসান আর তাইজুলকে ফিরিয়ে ইনিংসে নেন পাঁচ উইকেট। আর এবাদত হোসেনকে ফিরিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন থারিন্দু।