রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় যুদ্ধ অবসানের পথ আরও জটিল হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি, রাশিয়া বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছে এবং কবে হত্যা থামাবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ কারণেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।’
বিবিসির খবরে বলা হয়, এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার ওয়াশিংটন যাচ্ছেন জেলেনস্কি। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে মস্কোর সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুদ্ধবিরতি এড়িয়ে সরাসরি স্থায়ী শান্তি চুক্তির দিকে এগোতে চান।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শনিবার আলাস্কা বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, ‘এই ভয়াবহ যুদ্ধের ইতি টানার এটিই সর্বোত্তম উপায়। কারণ যুদ্ধবিরতি সাধারণত টেকে না।’
ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর জেলেনস্কি প্রকৃত ও স্থায়ী শান্তির কথা বললেও শর্ত হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন ‘বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’। এছাড়া রাশিয়ার অধিকৃত অঞ্চল থেকে শিশুদের ফেরত দেওয়ার দাবিও জেলেনস্কির।
ট্রাম্পকে যে প্রস্তাব পুতিন দিয়েছেন, তাতে ইউক্রেনকে দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে। বিনিময়ে রাশিয়া দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন ফ্রন্টে অবস্থান স্থির করবে। তবে জেলেনস্কি এরই মধ্যে দনবাস অঞ্চল ছাড়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন, কারণ তার মতে এটি ভবিষ্যৎ রুশ আগ্রাসনের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
আলাস্কা বৈঠককে ‘খুবই কার্যকর’ বলে বর্ণনা করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘সংকটের উৎপত্তি ও কারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এগুলো দূর করার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব।’
ইউক্রেনের মূল দাবি হলো দ্রুত যুদ্ধবিরতি, তারপর দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতা। কিন্তু ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এদিকে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় নেতারা বলেছেন, যে কোনো আলোচনায় জেলেনস্কিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারা বলছেন, ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ড নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র ইউক্রেনেরই।’