ইরানে বিমান হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এক ডজনেরও বেশি শহরে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ জনতা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণ জানায়, রোববার নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, শিকাগো, ওয়াশিনটন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন শহরে আয়োজিত বিক্ষোভের অনেকগুলোই অল্প সময়ের মধ্যে শনিবার রাতে সংগঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা এগুলোকে ‘জরুরি সমাবেশ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
এসব বিক্ষোভে কোথাও শতাধিক, আবার কোথাও স্বল্প সংখ্যক মানুষকে অংশ নিতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত ‘নো কিংস’ বিক্ষোভের তুলনায় এসব বিক্ষোভে জনসমাগম ছিল অনেকটাই কম।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে ইরানের পতাকা বহন করতে দেখা যায়। অনেকে ‘ইরানে যুদ্ধ বন্ধ করো’ লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার বহন করেন। হোয়াইট হাউসের গেটের বাইরে এরকম বিক্ষোভে অন্তত ২০০ জন অংশ নেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন যুদ্ধবিরোধী এবং কেউ কেউ মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য।

ভিয়েতনাম যুদ্ধে হেলিকপ্টারের পাইলট, ৭৮ বছর বয়সী রন কারমাইকেল বলেন, ‘ট্রাম্প একজন রাজা হতে চাইছেন। এভাবে একজন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান আচরণ করতে পারেন না!’
শিকাগোর ডাউনটাউনে অনুষ্ঠিত আরেকটি সমাবেশে ২০০ জনের বেশি মানুষ অংশ নেন। সেখানে অংশ নেওয়া আলি তারোখ জানান, ১২ বছর আগে রাজনৈতিক কারণে ইরানে দুই বছর কারাবন্দি থাকার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘এই বিমান হামলার খবর আমার জন্য সবচেয়ে খারাপ সংবাদ হতে পারত। আমি ইরানের বর্তমান সরকারের বিরোধী, কিন্তু জানি, ধীরে ধীরে পরিবর্তনই সঠিক পথ। ওখানে ক্ষমতার পট পরিবর্তন প্রায় অসম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানে গণতন্ত্রের সম্ভাব্য উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করছেন।’
অনেক বিক্ষোভকারী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ইরানের সঙ্গে বাড়তে থাকা মার্কিন সংঘাত গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ আরও বাড়াবে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ২৬ বছর বয়সী নার্স নূর আবদেল-হাক বলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকটের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে জড়িত। তার পরিবারের বেশিরভাগই গাজা বা পশ্চিম তীরে বাস করে।
‘আমরা আরও হত্যা, আরও ধ্বংস চাই না,’ বলেন তিনি।
ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার মধ্যে অ্যাবনার ক্লে পার্কে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন ২৩ বছর বয়সী ভায়োলেটা ভেগা, যিনি পেশায় ইন-হোম কেয়ার কর্মী এবং রিচমন্ড শাখার ‘পার্টি ফর সোশ্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন’-এর নেত্রী। ‘চাকরি ও শিক্ষার জন্য টাকা দাও, যুদ্ধ ও দখলের জন্য নয়’– এই স্লোগানে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তিনি।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ভেগা বলেন, ‘আমি নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করছি, কারণ আজ পুরো দেশজুড়ে একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে।’