ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত-এমনটাই মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইপসোস পরিচালিত এক যৌথ জনমত জরিপে দেখা গেছে, মার্কিনিদের ৫৮ শতাংশ মনে করেন, জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের উচিত ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং ৯ শতাংশ মতামত দেননি।
ছয় দিন ধরে চলা এই জরিপটি শেষ হয়েছে গত ১৮ আগস্ট। এর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়, যার ফলে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ে-বিশেষত গাজা উপত্যকায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে।
জরিপ চলাকালেই আলোচনায় আসে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়। হামাসের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ওই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় আটক অর্ধেক ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ একাধিক দেশ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অকল্পনীয়’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না, যার ফলে সাধারণ মানুষ খাদ্য ও ওষুধের অভাবে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। তবে ইসরায়েল বলছে, ত্রাণ প্রবেশে তারা বাধা দিচ্ছে না, বরং হামাসই ত্রাণ আত্মসাৎ করছে। হামাস এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
জরিপে অংশ নেওয়া মার্কিনিদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ মনে করেন, গাজার অনাহারী ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা পাঠানো উচিত। বিপক্ষে মত দিয়েছেন ২৮ শতাংশ। সহায়তার বিরোধিতাকারীদের মধ্যে বড় অংশই ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের সমর্থক; তাদের মধ্যে প্রায় ৪১ শতাংশ এই সহায়তার বিপক্ষে।
রয়টার্স-ইপসোস পরিচালিত এই অনলাইন জরিপে মোট ৪,৪৪৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিক অংশ নেন। জরিপের ফলাফলে সর্বোচ্চ প্লাস-মাইনাস ২ শতাংশ হেরফের থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।