শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। হজ করতে সৌদি আরবে যাওয়া ব্যক্তিরা সেলাইবিহীন সাদা কাপড় (ইহরাম) পরে আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করছেন তারা। সারা বিশ্বের নানা ভাষার, নানা বর্ণের, নানা জাতির কোটি কোটি নারী-পুরুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে ‘লাব্বাইক…আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’।…
অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীরা মিনা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে সূর্য ওঠার আগে আরাফাতের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন এবং পৌঁছাতে হবে যোহরের আগে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এবার বাংলাদেশ থেকে ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন হজ করতে সৌদি আরব গেছেন। অন্যান্য দেশ থেকে গেছেন প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার। এরসঙ্গে স্থানীয় হজযাত্রী মিলে এ সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হতে পারে।
আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত থাকাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। যোহর এর থেকে আসরের নামাজ সংক্ষিপ্ত আকারে একই সঙ্গে পড়েন হাজিরা। সেখানে আরাফাতের ময়দানের একপ্রান্তে মসজিদে নামিরাতে হজের খুতবা দেন ইমাম।
পরদিন কোরবানির মধ্য দিয়ে উদ্যাপন হবে ঈদুল আজহা। বুধবার (৮ জিলহজ) তারা সেখানে পৌঁছেছেন।
বুধবার ফজর (ভোরের নামাজ) পড়ে যোহরের ওয়াক্তের আগেই মিনায় পৌঁছাতে হয়। যাবার পথে তাদের কণ্ঠে থাকে লাব্বাইক আল্লাহুম্মা…।
এর আগে হজ করতে সৌদি আরবে যাওয়া ব্যক্তিরা সেলাইবিহীন সাদা কাপড় (ইহরাম) পরে মিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন। এর মাধ্যমে শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা।
৯ জিলহজ (বৃহস্পতিবার) যোহরের আগে থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত পুরো সময় আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা ফরজ। এরপর হাজীরা মাগরিবের নামাজ না পড়েই মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।
মুজদালিফায় পৌঁছে হাজিরা মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন এবং মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করবেন, থাকবেন খোলা আকাশের নিচে।
সেখানে সারারাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে ফজরের নামাজ পড়ে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। মুখে থাকে তাকবির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’…
এ দিন শয়তানকে মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করতে হয় মুজদালিফায় অবস্থানের সময়, রাতে কিংবা সকালে।
হজের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ১০ জিলহজ সকালে মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে তিনবার জামরাতে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।
বড় জামরাতে পাথর নিক্ষেপ করে মিনায় কোরবানির পশু জবাই করতে হয়। এ ক্ষেত্রে যারা সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করেন, তারা এসএমএস-এর মাধ্যমে কোরবানি সম্পন্ন হওয়ার বার্তা পান।
এরপর চুল কেটে ফেলতে পারেন এবং সাধারণ কাপড় পরে যেতে পারেন কাবাঘর প্রদক্ষিণ করতে। কাবাঘর প্রদক্ষিণ শেষে দুই রাকাত নামাজ পড়ে তারা চলে যান সাফা-মারওয়া মধ্যে সাতবার ছুটোছুটি করতে।
১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে ধারাবাহিকভাবে ছোট, মধ্যম ও বড় জামরাতে ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে প্রতিদিন।
তবে যদি কেউ পাথর নিক্ষেপের আগে কিংবা পরে কাবা শরিফ গিয়ে তাওয়াফ করেন, তাহলে তাকে তাওয়াফের পর আবার মিনায় চলে আসতে হবে এবং রাতে মিনায় অবস্থান করতে হবে।
নারী, বৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে দুর্বলরা পাথর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে রাতের সময় বেছে নিলে ভাল।