মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read

চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।

এর আগে, ২৬ আগস্ট নবম দিনের পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুল ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মোস্তাক আহমেদ, ফেনীর ব্যবসায়ী আহত নাসির উদ্দিন ও শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানা মো. সাঈদুর রহমান জবানবন্দি দেন। এখন পর্যন্ত মোট জবানবন্দি দিয়েছেন ২৯ জন সাক্ষী।

জবানবন্দি শেষে শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন তাদের জেরা করেন। ট্রাইব্যুনালের পক্ষে ওইদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। এ সময় প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা সঙ্গে ছিলেন।

২৫ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের অষ্টম দিনেও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার ও শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগমসহ পাঁচজনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগের দিন সাক্ষ্য দেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী গিয়াস উদ্দিন এবং মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম ও কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর এই মামলার ২০ ও ১৮ আগস্ট শুনানির ষষ্ঠ, পঞ্চম দিনেও পাঁচজন করে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

১৭ আগস্ট শুনানির চতুর্থ দিনে সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগমসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ রেকর্ড করে ট্রাইব্যুনাল।

এ ছাড়াও শুনানি শুরুর পর প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভুক্তভোগী হিসেবে আরও পাঁচজন ট্রাইবুনালের কাছে জবানবন্দি দেন। তারা হলেন, রিনা মুর্মু, সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক, পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান, চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন এবং আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।

অন্য দিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার অন্যতম আসামী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে, ৩০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এতে প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে।

মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার এই অভিযোগপত্রে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র, চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি এবং দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো বাকি আছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা ১২ মে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *