মহালয়ায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঘট স্থাপন, দেবী দুর্গার আবাহন

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
শুভ মহালয়ায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা-আচার, নৃত্য-গীতিতে দেবী দুর্গার আবাহন। ছবি: সাদিক আল আশফাক/টাইমস
Highlights
  • আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত মহালয়ার দিনটি সারা দেশেই বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে।

মহালয়া থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এ উপলক্ষে মন্দির ও পূজা কমিটিগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে রোববার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপে, ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে চণ্ডীপাঠ, চণ্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্যদিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগ লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হয়।

শুভ মহালয়ায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা-আচার, নৃত্য-গীতিতে দেবী দুর্গার আবাহন। ছবি: সাদিক আল আশফাক/টাইমস

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানায়, দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় হয় পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ অনুষ্ঠান। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী বলেন, মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। মহালয়ায় দেবীদুর্গার ঘট বসানো হয়। ঘট বসানোর মাধ্যমে দেবীদুর্গা বেলতলায় অবস্থান নেন। অর্থাৎ কৈলাস (স্বর্গলোক) থেকে মর্ত্যে (বেলতলায়) আসবেন দেবী দুর্গা।

শুভ মহালয়ায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা-আচার, নৃত্য-গীতিতে দেবী দুর্গার আবাহন। ছবি: সাদিক আল আশফাক/টাইমস

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত মহালয়ার দিনটি সারা দেশেই বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে।

এবার দেবীদুর্গা মর্তে আসবেন গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত; আর যাবেন দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।

মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুরাণে আছে, দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব–মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না।

শুভ মহালয়ায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা-আচার, নৃত্য-গীতিতে দেবী দুর্গার আবাহন। ছবি: সাদিক আল আশফাক/টাইমস

ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে মহামায়া রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে দেবী দুর্গা নয় দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করেন।

মহালয়ার দিন ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা।

সনাতন ধর্মে বলা হয়, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে জল-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *