রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন ও পোড়ানোর ঘটনাকে ‘অজ্ঞতাজনিত বর্বরতা’ আখ্যা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে ইসলাম, ইসলামী রাজনীতি কিংবা ইসলামী চিন্তার কোনো সম্পর্ক নেই।’
শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ও দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে বারবার অবগত করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তাই স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা তদন্ত করতে হবে।’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলে ইসলাম বিস্তৃত হয়েছে প্রেম-ভালোবাসা, যুক্তি ও সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে। ভিন্নমতের সঙ্গে সহাবস্থান করেই ইসলাম জায়গা করে নিয়েছে। তাই এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই ইসলামের শিক্ষা নয়।’
‘রাসুল (সা.) কাফেরের মরদেহকেও সম্মান করেছেন। সেখানে মুসলমান বলে দাবিদার কারও মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেওয়া ইসলামের চিন্তাধারায় কল্পনাও করা যায় না। যারা এটা করেছে তারা শরিয়াহ, ইসলামের দাওয়াতি নীতিমালা কিংবা ইসলামের শত্রুর প্রতিও আচরণের শিক্ষা কিছুই বোঝে না’, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা মাজার বানিয়ে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চালান, তারাও ইসলামের মূল বার্তা জানেন না। ফলে দুই উচ্ছৃঙ্খল ও অজ্ঞ দলের উগ্রতা এ ধরনের ঘটনায় রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক ইসলাম চর্চার সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।’
ধর্মীয় সমস্যার সমাধান নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ দেশ যেহেতু ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ, তাই ধর্মীয় বিষয় নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি। যদি সামাজিক ও ধর্মীয় ব্যবস্থাপনার মধ্যে বিষয়টি সমাধান করা যেত, তাহলে এভাবে পরিস্থিতি জটিল হতো না।’
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা শরিয়ত পরিপন্থীভাবে দাফনের অভিযোগ তুলে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সংঘর্ষে আহত রাসেল মোল্লা নামের নুরাল পাগলার এক ভক্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম তেনাপচা গ্রামের আজাদ মোল্লার ছেলে।