মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ গ্রহণ করেছেন তার ছোট ভাই চিরঞ্জন সরকার।
শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়ি মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকায় রওনা হয়।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে বলা হয়, সাংবাদিক চিররঞ্জন সরকার জানান, ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি তার মরদেহ নিয়ে প্রথমে যাবে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসভবনে। পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শেষ শ্রদ্ধা শেষে তাকে নেওয়া হবে সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালী মন্দিরে। সেখানেই হবে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান।
এদিন মুন্সীগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভুরঞ্জনকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জেলার জেনারেল হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ এহসানুল ইসলাম বলেন, ‘তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্টের পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে।’
নিহত সাংবাদিকের ভাই চিররঞ্জন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার ভাই কর্মস্থল বনশ্রীর ‘আজকের পত্রিকার’ কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। অফিসে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি সেখানে যায়নি। বন্ধুবান্ধব, আত্নীয় স্বজন কোথাও তার কোনো খোঁজ মেলেনি। তার মোবাইলটিও বাসায় ছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ বিষয়ে রাজধানীর রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
পরে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চরবলাকি সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে শুক্রবার দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।
বিভুরঞ্জন সরকার গত পাঁচ দশক ধরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন।
বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার আগে নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ইমেইলে পাঠানো ‘খোলা চিঠিতে’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং-এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসবিভাগ তো মনখোলা নয়। মিডিয়ার যারা নির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন তারা সবাই আতঙ্কে থাকেন সব সময়। কখন না কোন খবর বা লেখার জন্য ফোন আসে। তুলে নিতে হয় লেখা বা খবর!’
তার প্রশ্ন, ‘আমি এখন কী করি? কোন পথে হাঁটি?’ ফুটনোটে লেখাটিকে তিনি তার ‘জীবনের শেষ লেখা’ উল্লেখ করেন।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে তিনি নানা কারণে হতাশায় ভুগছিলেন।