বাংলাদেশ নারী ফুটবলের পোস্টারগার্ল সাবিনা খাতুন ভুটানের ঘরোয়া লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখালেও জাতীয় দলে তার জায়গা নিশ্চিত নয়—এমনটাই জানিয়েছেন নারী দলের প্রধান কোচ পিটার বাটলার। সাবিনার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সকে “মিথ্যা আভা” আখ্যা দিয়ে বাটলার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় দলে সুযোগ পেতে হলে শুধু নাম নয়, লাগবে শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স।
“ভুটানের লিগে খেলা মানেই আন্তর্জাতিক মানে খেলা নয়। এমন পারফরম্যান্স দিয়ে কেউ জাতীয় দলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জায়গা পাবে—এমনটা হবে না। আমি তো বলেছিলাম, এমনকি ৫৮ বছরের কিরণ আপাও ওখানে গিয়ে সেন্টার ফরোয়ার্ড হয়ে খেলতে পারবেন,” ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে মন্তব্য করেন বাটলার।
উল্লেখ্য, ভুটানের লিগে সাবিনা একের পর এক গোল করে আলোচনায় ছিলেন। দেশের মিডিয়াও তার সেই ‘গডলেভেল’ পারফরম্যান্সকে বড় করে প্রচার করেছে। তবে বাটলারের মতে, লিগের মান এতটাই নিচু যে সেখানকার গোল বা পারফরম্যান্স দিয়ে কাউকে ‘অটো চয়েস’ বানানো ঠিক নয়।
ভুটানের থাকা যে ৫ জনকে ডাকেননি তাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে আলাদা করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যদি কোচের সেই ব্যাখ্যা অনেকের কাছেই গ্রহনযোগ্য হয়নি। তিনি সাবিনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তার ফর্ম শেষের দিকে।’
অন্যদের ফিটনেসের ঘাটতি ও লম্বা সময় ধরে অনুশীলনে না থাকার কারণ সামনে এনেছেন। মুখে কোচ যাই বলুক তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেওয়ার কারণেই যে সাবিনা ও মাসুরা ফর্মে থাকার পরও ডাকেননি সেটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার।
সাবিনা ও মাসুরাকে কেন নেওয়া হয়নি বাফুফে সে বিষয়ে কোচের কাছে কিছু জানতে চেয়েছিল কিনা সে প্রসঙ্গে মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন, ‘দল ঠিক করা কোচের এখতিয়ার। আমরা কখনো কোচের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না। এর ব্যাখ্যা কোচই ভালো দিতে পারবেন। তিনি স্বাধীন।’
পেছনের জটিলতা এখনো প্রভাব ফেলছে?
সাবিনাকে ঘিরে বিতর্ক নতুন নয়। কিছুদিন আগেই পিটার বাটলারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন কয়েকজন সিনিয়র নারী ফুটবলার। তখন একাধিক খেলোয়াড়—যার মাঝে ছিলেন সাবিনা—খুলে বলেছিলেন, তারা এই কোচের অধীনে খেলতে চান না। যদিও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) হস্তক্ষেপে সেই সংকট সমাধান হয়, এবং জাতীয় দলের ক্যাম্পে সবাই ফিরে আসেন।
তবুও, বাটলার আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন—”নাম দিয়ে নয়, কাজ দিয়ে দলে ঢুকতে হবে। জাতীয় দলে খেলা সম্মানের, সেটি কেউ চাইলে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।”
“নেই কোনো অটো চয়েস” — বাটলারের বার্তা
সাবিনাকে নিয়েই নয়, বাটলারের এই বার্তা পুরো স্কোয়াডের জন্য। তিনি কোনো খেলোয়াড়কেই ‘অটো চয়েস’ হিসেবে বিবেচনায় আনতে রাজি নন, সেটা সাবিনাই হোক বা অন্য কেউ। তিনি বারবারই জোর দিচ্ছেন ডিসিপ্লিন, ফিটনেস ও পারফরম্যান্সের ওপর।