ভাঙনে অরক্ষিত কক্সবাজার সৈকত

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ভাঙন। ছবি: টাইমস

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ভাঙন। সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার জুড়ে সৈকতের বালিয়াড়ি একের পর এক ভেঙে পড়ছে।

জানা গেছে, বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে উপড়ে গেছে শতাধিক ঝাউগাছ। ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা আর ছিঁড়ে গেছে বৈদ্যুতিক তার। হুমকির মুখে পড়েছে সরকারি ও বেসরকারি বহু স্থাপনা।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভাঙন ঠেকাতে নেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। যদিও সাধারণ মানুষ মনে করছেন, ‘সমুদ্রকে শাসন অতটা সহজ নয়’।

এ সমুদ্র সৈকতের পাশেই বসবাস করেন জেলে রফিক আহমেদ। পেশায় জেলে হলেও সাগরের প্রতিদিনের রূপ তার চেনা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা এলেই সাগরের ঢেউ ভয়ংকর হয়ে ওঠে। আমরা আতঙ্কে থাকি কখন না জানি বাড়িঘর ভেঙে যায়, কখন রাস্তা তছনছ হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতের বালিয়াড়ির ভাঙন ঠেকাতে আগে থেকেই ফেলা হয়েছিল জিও ব্যাগ। কিন্তু সেই জিও ব্যাগও একের পর এক ঢেউয়ের ধাক্কায় সরে যাচ্ছে। একই সঙ্গে উপড়ে পড়ছে বড় বড় ঝাউগাছ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমাদের মনে হয়েছিল জিও ব্যাগ কাজ করবে, কিন্তু এখন আর কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না ভাঙন।

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ভাঙন। ছবি: টাইমস

তারা বলছেন, কলাতলী থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত যা অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে পুরো সমুদ্র সৈকতই সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাবে।

সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে নাজিরারটেক পয়েন্ট পর্যন্ত এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকান ও পর্যটন ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট বহু স্থাপনা রয়েছে। এসবই এখন ঝুঁকির মুখে।

স্থানীয়রা মনে করছেন, ভাঙন রোধে জরুরিভিত্তিতে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু জিও ব্যাগে হবে না, প্রয়োজন গাছ লাগানো ও সঠিক পরিকল্পনা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুর রহমান ও করিম উল্লাহ বলেন, ‘সমুদ্র সৈকতের ভাঙনে শুধু প্রকৃতি নয়, আমাদের জীবন-জীবিকাও হারিয়ে যাচ্ছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে সৈকতের এই সৌন্দর্য্য আর রক্ষা পাবে না।’

সৈকতের ব্যবসায়ীদের মতে, গেল কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুম আসলেই একই সমস্যা চলছে। জোয়ারের তীব্রতা বেড়ে সাগরের পানি উপকূলের কাছাকাছি চলে আসে। আর এই কারণে দ্রুত ভেঙে পড়ে সমুদ্র সৈকতের ‘সুন্দর বালিয়াড়ি’।

তবে এবারের ভাঙন একটু বেশিই ভয়াবহ বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিশ্বের অন্যতম এই পর্যটন এলাকা তার সৌন্দর্য হারাতে পারে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ভাঙনের বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। প্রাথমিক কিছু ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

তবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *