ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থীকে বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে ছিলেন গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। কারাবন্দি অবস্থায় নোবেল বিয়ে করেছেন এ মামলার বাদীকে, আর এ নববধূঁর জিম্মাতেই জামিন দেওয়া হয়েছে নোবেলকে।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব শুনানি শেষে এক হাজার টাকা মুচলেকায় নোবেলের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নোবেলের আইনজীবী মো. খলিলুর রহমান জামিনের আবেদন করেন। এদিন বিচারক নোবেলের উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন। নোবেল ও ভিকটিমের উপস্থিতিতে জামিন শুনানি হয়। ‘নোবেল জামিন পেলে আপত্তি নেই’ বলে ভিকটিম আদালতে জানান। শুনানি শেষে আদালত বাদীর জিম্মায় নোবেলের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন আবেদনে বলা হয়, আসামি নোবেল গত ২০ মে থেকে কারাগারে আটক আছেন। যেহেতু বাদী ও আসামি শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি অঙ্গীকারনামা দিয়ে স্বীকার করেছেন। বাদীর জিম্মায় আসামি জামিন পেলে বাদীর কোনো আপত্তি নেই। আসামি জামিন পাওয়ার পর বিবাহ রেজিস্ট্রি করে নিবেন।

এর আগে গত ১৮ জুন উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে তাদের বিয়ে সম্পাদন করে আদালতকে অবগত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কারা কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা মেনে বাদীর সঙ্গে নোবেলের বিয়ের ব্যবস্থা করে।
গত ১৯ মে রাত ২টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে গায়ক নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থীকে বাসাবাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে ডেমরা থানায় মামলা হয়। তখন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রী। ২০১৮ সালে আসামি নোবেলের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হলে বাদীর সাথে নোবেল প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথাবার্তা বলতেন। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে বাদীর সাথে দেখা করে নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে কলেজছাত্রীকে ডেমরা এলাকায় নিয়ে যান।
এরপর নোবেল বাদীকে ডেমরার বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে নোবেল তার ২/৩ জন সহযোগী নিয়ে কলেজছাত্রীকে বাসার সিঁড়ি দিয়ে চুলের মুটি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। তা দেখে বাদীর পিতা-মাতা নিখোঁজ কন্যাকে চিনতে পারেন এবং তাকে উদ্ধার করতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে কল দিয়ে সহযোগিতা চান। এর পরই ডেমরা থানা পুলিশ বাদীকে উদ্ধার করে।