বিসিবির নজরে বরিশাল, আসছে কঠোর গাইডলাইন

টাইমস স্পোর্টস
4 Min Read
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন আকরাম খান। ছবি: টাইমস অফ বাংলাদেশ

গেল কয়েক মৌসুম ধরে মাঠের পারফরম্যান্সে এলোমেলো বরিশাল বিভাগ। চার দিনের ফরম্যাট কিংবা টি-টোয়েন্টি; সর্বত্রই তলানিতে এই দলটা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব, দল গঠনে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এমনকি নিয়মের তোয়াক্কা না করে কোচকে না জানিয়ে এক সিনিয়র ক্রিকেটারের নিজেই দল গঠনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেছেন, দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভাগীয় দলগুলোকে আলাদা গাইডলাইন দেবেন তারা। 

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আট বিভাগীয় দল নিয়ে শুরু হচ্ছে এনসিএল টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসর। কিন্তু এর আগেই বিভিন্ন ইস্যুতে অস্বস্তির হাওয়া বইছে বরিশাল দলে। অধিনায়ক বদল, একই ইস্যুতে কোচ-ম্যানেজারের ভিন্ন মত, সিনিয়র ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব এবং দলের ভেতর গড়ে ওঠা কোরাম নিয়ে বেশ সমালোচিত বরিশাল। একাধিক ক্রিকেটার বিসিবিতে সরাসরি অভিযোগও জানান, বিভিন্ন ইস্যুত্যে। শনিবার বিসিবি কার্যালয়ে এনসিএল সমন্বয় কমিটির প্রায় ঘণ্টা তিনেকের বৈঠকে তাই প্রাধান্য পেল বরিশালের কর্মকাণ্ড। 

বরিশালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে বৈঠক শেষে বিসিবি পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেন, ‘আমরা নিজেরাও এটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি। কারণ অন্য কোনো ডিভিশনের দল নিয়ে এইরকম কথা-বার্তা হয় না। এরা ম্যানেজার নিয়ে খুশি না, কোচ নিয়ে খুশি না অধিনায়ক নিয়ে খুশি না। খেলোয়াড়দের নিচের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এটা হওয়া উচিত না। তো সেটা নিয়ে আমরা লম্বা সময় আলাপ করেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এটা খুব গুরুত্ব সহকারে আমরা মনিটর করব।’

আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি বিভাগীয় দলের ম্যানেজারকে ডাকা হবে বিসিবিতে। জানানো হবে দলীয় গাইডলাইন। এরপরও যদি কোনো কারণে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে, সেক্ষেত্রে জড়িতদের ভবিষ্যতের জন্য আল্টিমেটাম এখনই দিয়ে রাখলেন আকরাম। দেশের খেলার সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে কঠিন পদক্ষেপ নিতেও পিছপা হবেন না বলে জানিয়ে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আকরাম বলেন, ‘যদি দেখি যে খেলা নষ্ট হচ্ছে বা মানসম্মান খারাপ হচ্ছে তাহলে আমরা একশন নিব। আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে আমরা প্রতিটা ডিভিশনের ম্যানেজারদের ডেকে আমরা জানিয়ে দিব এটি। পাশাপাশি তাদের গাইডলাইন দিব যাতে সবকিছু ঠিকঠাক থাকে। তারপরও যদি তারা নিজেদের কাজ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ভবিষ্যতে আর তাদের এ কাজ করতে দিব না আমরা।’

বরিশালকে ঘিরে এসব ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। জাতীয় দলের সাবেক দুই ক্রিকেটার ফজলে মাহমুদ রাব্বী ও সোহাগ গাজীর দ্বন্দ্ব থেকেই সবকিছুর সূত্রপাত। দলে আলাদা দুটি কোরাম গড়ে উঠেছিল এই দুই ক্রিকেটারের নেতৃত্বে। যেখানে আবার বেশিরভাগ ক্রিকেটারই ছিলেন রাব্বীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে দল গঠনে স্বজনপ্রীতির অভিযোগও উঠেছে বেশ কয়েকবার। 

ঘটনাচক্রে দলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, তোপের মুখে গত বছর জাতীয় লিগ চলাকালীন অধিনায়কত্ব ছাড়েন রাব্বী। মাঝপথে দায়িত্ব নেন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।  সেখান থেকে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেন সোহাগ গাজী। তার বিরুদ্ধেও সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে কোচকে না জানিয়ে প্রাথমিক দল বানানোর। নিয়মানুযায়ী কোনো টুর্নামেন্টের আগে বিভাগীয় কোচ ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল পাঠান বিসিবিতে। জাতীয় নির্বাচকরা সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে গড়ে দেন চূড়ান্ত স্কোয়াড। 

কিন্তু বরিশাল দলের সূত্রে জানা গেছে, অধিনায়ক সোহাগ গাজী নিজেই ৩০ সদস্যের দল গঠন করেছেন, যার মধ্যে তিন-চারজন ক্রিকেটারের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে দলের মধ্যেই আছে অসন্তোষ। সোহাগ গাজী অবশ্য একা হাতে দল গঠনের কথা অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, দল গঠনে কোচকে পরামর্শ দিয়েছেন কেবল। 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *