‘চুরি’ হওয়া ১০ চাকার সন্ধানে বিমান

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুই কর্মী ১০টি চাকা এক বেসরকারি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাকে দিয়েছেন। প্রতীকী ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
Highlights
  • ‘প্রতিটি চাকার মূল্য ৫ থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে ১০টি চাকার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় এক কোটি টাকা। বিষয়টি চুরির পর্যায়ে পড়লেও জিডিতে ‘চুরি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবহৃত ১০টি উড়োজাহাজের চাকা গোপনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তাকে দেওয়ার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় বিমানের নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মোশারেফ হোসেন সোমবার  বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডিতে বলা হয়, শনিবার হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের পাশের অকশন শেড থেকে ১০টি ‘আনসার্ভিসেবল টায়ার’ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে বিমানের ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার আরমান হোসেন ও স্টোর হেলপার সামসুল হক স্বীকার করেন, তারা ইউএস-বাংলার এজিএম শফিকুল ইসলামকে এসব টায়ার দিয়েছেন, যা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই করা হয়েছে।

বিমানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিটি চাকার মূল্য ৫ থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে ১০টি চাকার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় এক কোটি টাকা। বিষয়টি চুরির পর্যায়ে পড়লেও জিডিতে ‘চুরি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। বরং এটি তদন্তসাপেক্ষে অননুমোদিত হস্তান্তর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে বিমানের উড়োজাহাজে বারবার যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটছে। গত এক মাসে অন্তত আটবার বোয়িং উড়োজাহাজে গোলযোগ দেখা দিয়েছে, যার মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে চাকা ফাটার ঘটনা রয়েছে। এসব কারণে ফ্লাইট বাতিল ও দীর্ঘ বিলম্বে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। চার সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা প্রতিটি যান্ত্রিক সমস্যার উৎস ও দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করবে।

এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত চাকা প্রতিস্থাপনের জন্য জেদ্দা, দুবাই, আবুধাবি, মদিনা, শারজাহসহ বিভিন্ন আউটস্টেশনে অতিরিক্ত চাকা মজুদ রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রয়োজনীয় চাকা ক্রয়ের কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে।

কারিগরি ত্রুটির ঘটনায় ইতোমধ্যে একজন প্রকৌশলী কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে এবং আরেকজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদারে নতুন রাত্রীকালীন শিফট চালু করা হয়েছে এবং প্রকৌশলীদের পুনঃপ্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

সবশেষে বিমান জানায়, যান্ত্রিক সক্ষমতা বাড়াতে নতুন শিক্ষানবিশ মেকানিক নিয়োগ এবং ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়াও চলছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *