দাবি আদায়ে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করলে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের বাধা দিয়েছে পুলিশ। এসময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাতটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের পাশাপাশি লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব সংলগ্ন সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকে এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকালে শিক্ষকরা ‘লংমার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তারা সচিবালয় অভিমুখে রওনা হন।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৭তম ব্যাচের নিবন্ধিত প্রার্থীদের জন্য আপিল বিভাগের রায় অনুসারে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে; ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএ-র সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আন্দোলনকারীরা বিকেলেও প্রেসক্লাব মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, সকাল থেকেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালন করছিলেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৭তম নিবন্ধনধারীরা। হঠাৎ দুপুর দেড়টার দিকে তারা সচিবালয়ের সামনে আসে। তখন সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছিল। ঘটনাস্থলে পাঁচ থেকে ছয় জন আহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওনাদের আমি পাঁচ জনকে সচিবালয়ে পাঠিয়েছিলাম, যেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে কথা বলে আপডেটগুলো জেনে আসেন। পরে আন্দোলনকারীরা বলেছেন, সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা যাবেন না । আন্দোলনকারী লিংক রোডে চলে আসেন, সেখানে পুলিশের একটা ব্যারিকেড ছিল। ব্যারিকেডটা যখন ভাঙার চেষ্টা করে তখন পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু তারপরও তারা মানছিলেন না, একটু বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিলেন।’
পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ আলম বলেন, ‘সচিবালয়ে তো আমরা যেতে দিতে পারি না, সেখানে তো কার্যত ১৪৪ ধারা জারি করা আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের এক-দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয়েছে। এতে আমাদের দুই-একজন পুলিশ সদস্যও সামান্য আহত হয়েছেন।’
তবে পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা ৬-৭টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার কথা জানান।
‘নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরাম’ এর সভানেত্রী নীলিমা চক্রবর্তী পুলিশি হামলার বিষয়ে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ওপরে এই হামলা হল। এটা ক্ষোভের, এটা বেদনার, নিন্দার ভাষা নেই।’
‘কেন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে না? কেন অসহায় কিছু মানুষ আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি? এর আমরা অবসান চাই।’