ফেনীতে ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২৮৪টি স্কুলের সংস্কার হয়নি। মেরামত ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ১২ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৭৮ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে সংস্কার শুরুর নির্দেশনা না পাওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর মেরামত সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র খবরে বলা হয়, গত বছরের বন্যায় ফেনীর ৬ উপজেলায় মোট ৩১৪টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলোর সংস্কারে এ বছরের ২৯ এপ্রিল ১২ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ৮১২ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।
তার মধ্যে কেবল ৩০টি বিদ্যালয়ের মেরামত ও সংস্কার কাজ হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৪ টাকা।
ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, ‘বরাদ্দ বাস্তবায়নে দরপত্র করার মতো সময় ছিল না বলেই অর্থ ফেরত গেছে। তবে বিষয়টি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, তাই আগামী অর্থবছরে ফের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হবে। বরাদ্দ হাতে আসা মাত্রই সংস্কার কাজ শুরু হবে।’

এখনও সংস্কার না হওয়া কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, সংস্কারের সময় কম থাকায় বরাদ্দ পেয়েও তা কাজে লাগানো যায়নি। অনেক শিক্ষক নিজ পকেটের টাকা খরচ করে জরুরি কিছু সংস্কার করিয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, দেড় লাখ টাকার কম বরাদ্দ পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলোর মেরামত হয়েছে। বাকি ২৮৪টি বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটির সংস্কারে বরাদ্দ আসে দেড় লাখ টাকার বেশি। নিয়ম মেনে মেরামতের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে চিঠি দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী মেরামত কাজে অনীহা প্রকাশ করেন বলে দাবি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এরপর সময়মতো দরপত্র আহ্বান না করায় প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে যায় এবং ২৮৪টি বিদ্যালয়ের সংস্কার না করেই বরাদ্দকৃত অর্থ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ফেরত চলে যায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ জানান, ফেনীতে ৫৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালের বন্যায় ফেনী সদর উপজেলায় ১১৫টি, দাগনভূঞায় ১৬টি সোনাগাজীতে ১০২টি, ছাগলনাইয়ায় ৬৫টি, পরশুরামে সাতটি এবং ফুলগাজী উপজেলায় নয়টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।