বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হলো জনগণ এবং দেশে গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পর সাধারণ মানুষ কী ভাবছে, সে বিষয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোযোগী হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘ইংরেজিতে একটা কথা আছে-পারসেপশন, পাবলিক পারসেপশন। এটাই রাজনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বিষয়ে যুবদলের মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করুন, ফলওয়ালাকে জিজ্ঞেস করুন, কাঁচাবাজারের দোকানদারকে জিজ্ঞেস করুন—তাদের জীবনে কিছু বদলেছে কি? আমরা কি শুধু দেয়ালে ছবি আঁকার, কবিতা লেখার, বই ছাপানোর জন্য লড়েছি? যদি সত্যিকারের পরিবর্তন চাই, তবে আমাদের জানতে হবে তারা কী চান।’
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনায় গভীর হতাশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘পত্রিকায় পড়েছি—পুলিশ জুলাই আন্দোলনের পাঁচজন সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগ তারা এক সাবেক সংসদ সদস্যের থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কি পরিণতি, এটিই কি আমরা চেয়েছিলাম? দেশের মানুষ কি কেউ এটা চেয়েছিল? এত তাড়াতাড়ি যদি এই ঘটনা ঘটে, এক বছরও হয়নি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ কী?’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য দুই হাজারের বেশি মানুষ নিজের জীবন দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জুলাইয়ে গোটা বাংলাদেশ রাজপথে নেমে এসেছিল। আন্দোলনে যুবদলের শহীদ ৭৯ জন, ছাত্রদলের ১৪২ জন। যার যা অবদান আছে, তা তাকে দিতে হবে। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে।’
কোনো একটি দল বা ছাত্ররা একা আন্দোলন করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিশু-বৃদ্ধ সবাই জুলাই অভ্যুত্থানে নেমে এসেছিল। সবার অংশগ্রহণে স্বৈরাচারের বিদায় সম্ভব হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হাসিনার বিচারের তো কিছু দেখতে পেলাম না, এক বছর হয়ে গেল। যারা প্রকাশ্যে হত্যা করল, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হলো না?
মির্জা ফখরুল বলেন,’সংস্কারের বিষয়ে সরকারের অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। তবে যতই চাপ তৈরি করে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করা হোক না কেন, দেশের মানুষ লড়াই করতে জানে। দেশের মানুষ লড়াই করে দেশকে মুক্ত করেছে। তারেক রহমান চেষ্টা করছেন, কীভাবে বাংলাদেশকে আবার গড়ে তোলা যায়।’