ঠিক যেন গল টেস্টের পুনরাবৃত্তি। প্রথম ইনিংসে লিড নেয়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে শ্রীলংকাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্পিনার নাঈম হাসান। গলের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে নিজের উচ্চতার কারণে পাওয়া এক্সট্রা বাউন্স আর টাইট লাইন-লেংথে দেশের বাইরে প্রথমবার নিলেন পাঁচ উইকেট। কলম্বোতে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে শ্রীলংকার চোখ যেখানে ছিল ৩০০ রানের লিডে, নাঈমের সাথে তাইজুল ইসলামের স্পিন জাদুতে লংকানরা লিড নিতে পেরেছে ২১১। দেশের বাইরে তাইজুলের পঞ্চমবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেটে শিকারে ৪৫৮ রানে অল আউট হয়েছে শ্রীলংকা। প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ২৫০ ছোঁয়া স্কোরের নেপথ্যের কারিগরও বাংলাদেশের নাঈম-তাইজুল জুটি। দলের মূল ব্যাটারদের ব্যর্থতার ইনিংসে এই দুজন যথাক্রমে ২৫ ও ৩৩ রানের মহামূল্যবান ইনিংস না খেললে স্কোরবোর্ড দেখতে সুশ্রী হতো না, সেটা বলাই যায়। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও দেখালেন ভেলকি। কলম্বোর উইকেট প্রথম দুই দিন ব্যাটিং সহায়ক থাকলে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন থেকেই বল ঘুরতে শুরু করে। ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করা শ্রীলংকা প্রথম সেশনেই হারায় ৪ উইকেট। যেখানে দুটোই তাইজুলের।
টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা পাথুম নিসাঙ্কা তৃতীয় দিন মাঠে আসেন বড় ইনিংসের স্বপ্ন নিয়ে। তাইজুলের টার্ন করা ফুল লেংথ বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে শর্ট কভারে বিজয়ের হাতে ক্যাচ দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে এলবিডব্লিউ করেছেন দারুণ এক আর্ম বলে। থারিন্দু রথনায়েকে ফিরেছেন তাইজুলকে লং অনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিজয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে। শ্রীলংকার শেষ ও তাইজুলের পঞ্চম উইকেট আসিথা ফার্নান্দো।
সব মিলিয়ে টেস্টে ১৭তম বার, বিদেশে সাকিব আল হাসানের সমান পাঁচবার ও শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিতীয়বার পাঁচ উইকেট নিলেন তাইজুল। তার শক্তির সবচেয়ে বড় যে জায়গা, টানা একই স্পটে নিরলসভাবে বল করে যাওয়া। সেটা আরো একবার দেখালেন কলম্বো টেস্টে। দ্বিতীয় ইনিংসে একাই করেছেন ৪২.৫ ওভার। ১৩১ রানে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। পেস ভ্যারিয়েশন, মাঝেমধ্যে আর্ম বলের কারসাজিতে ভড়কে দেয়া; এসবও দেখা গেছে তার লম্বা বোলিং স্পেলে।
তাইজুলের সাথে দারুণ বল করেছেন অফ স্পিনার নাঈমও। আগেরদিন নিয়েছিলেন সেঞ্চুরির দুয়ারে থাকা দীনেশ চান্দিমালের উইকেট। তৃতীয় দিনও দেখিয়েছেন নিজের স্কিলসেট। বিশেষত কামিন্দু মেন্ডিসের বিপক্ষে ছিলেন দুর্দান্ত। গতির হেরফের আর একই জায়গায় বল করে করে কামিন্দুকে বেশ ভুগিয়েছেন নাঈম। কখনো জোরের ওপর করেছেন, কখনো ফ্লাইটেড বলে টেনে বের করে এনেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটারকে। তেমনই জোরের ওপর করা এক আর্ম বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন কামিন্দু। অভিষিক্ত সোনাল দিনুশাও স্টাম্প খুইয়েছেন তার কাছে ফ্লাইটেড এক ডেলিভারিতে।