লঘুচাপের প্রভাবে নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯১ মিলিমিটার পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে জেলার হাতিয়া ছাড়া বাকি আটটি উপজেলা এবং পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় জেলা শহর মাইজদীতে ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
টানা বৃষ্টির ফলে মাছের ঘের ও প্রজেক্ট পানিতে ভেসে গেছে। কৃষকরা আমনের বীজতলা ও বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে। বুধবার ভোর থেকে আবারও ভারী বর্ষণ শুরু হওয়ায় বেশিরভাগ সড়ক, অলিগলি ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে জেলার কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, মাধ্যমিক স্তরের কিছু বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
মাইজদী শহরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপার অফিস, ডিবি অফিস, রেকর্ড রুম, জজ কোর্ট ও বিদ্যুৎ অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনের সামনে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কিছু অফিসের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মচারী ও সেবা প্রত্যাশীরা।
শহরের প্রেসক্লাব সড়ক, রেড ক্রিসেন্ট মোড়, টাউন হল, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেলখানা সড়ক, নোয়াখালী সরকারি কলেজ সড়ক, মাইজদী বাজারসহ প্রধান সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
পৌরবাসীরা অভিযোগ করছেন, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং খাল-জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অবহেলাকেই দায়ী করেছেন তারা।
এছাড়া জেলার কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার নিচু এলাকাগুলোতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় সকাল থেকে স্থানীয়দের চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ও চরএলাহী ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়ার্ডের মানুষ একটানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়িঘর সম্পূর্ণভাবে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
রান্নাঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেক পরিবারে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা কবে কমবে- এ নিয়ে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী।