গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ‘স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তি হ্রাসে’ (শর্ট টাইম মেমোরি লস) ভুগছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নুরের শারীরিক অবস্থা দেখার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
রাশেদ খান বলেন, ‘অনেক কিছু ভুলে যাচ্ছেন নুর। তার নাক দিয়ে এখনো রক্ত ঝরছে। কথা শেষ করতে পারছেন না, অগোছালো কথা বলছেন। দুই ঘণ্টা আগে ওষুধ খেলেও পরে ভুলে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে কথার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ছেন। দাঁড়াতে পারছেন না, শরীরের ব্যালেন্স নেই। তার অবস্থা এখন পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত নয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের অবহেলা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে সুচিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হলেও একটি মহল তা বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
জাপা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবি করেন রাশেদ। তিনি বলেন, ‘শাহবাগে আমাদের সংহতি সমাবেশ ছিল, সেখানে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। সমাবেশ শেষে আমরা সবাই কার্যালয়ে ফিরে আসি। এরপর কে বা কারা জাপার অফিসে হামলা চালিয়েছে, তা জানি না। আমাদের দল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাপা মহাসচিব মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। ফ্যাসিবাদের দোসর শামীম হায়দার পাটোয়ারী গণঅধিকার পরিষদ নিষিদ্ধের দাবি করেছেন। তার এত বড় স্পর্ধা কীভাবে হয়।’
এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাপা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
হামলার জন্য গণঅধিকার পরিষদকে দায়ী করেছে জাপা। অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদ দাবি করছে, এতে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।
২৯ আগস্ট বিকালে জাপা ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল করেন। এরপর দলটির নেতারা বিজয়নগর কার্যালয়ে ব্রিফিং করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে বলে সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত দলের সভাপতি নুরুল হক নুর বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরদিন ৩০ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জাপা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দফা হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
সেদিন বিকালে কাকরাইল মোড় থেকে একদল বিক্ষোভকারী জাপা কার্যালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সড়কে আগুন জ্বালায়। পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে চেয়ার-টেবিল বের করে আগুন দেয়।
সে সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ ও জলকামান নিক্ষেপ করে।