নিসাঙ্কা-কুশালে ‘লঙ্কা-কাণ্ড’, উড়ে গেল বাংলাদেশ

টাইমস স্পোর্টস
4 Min Read
২৮ বলে ৭৮ রানের জুটিতে তান্ডব বইয়ে দিয়েছেন কুশাল-নিসাঙ্কা। ছবি: শ্রীলংকা ক্রিকেট

১৪ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে এমন অভিজ্ঞতা হবে, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বোধহয় কল্পনাও করেননি। পাথুম নিসাঙ্কার কাছে টানা তিন চার খেয়ে প্রথম ওভার শুরু। গুনলেন ১৪ রান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের কপালে কুশাল মেন্ডিসের কল্যাণে জুটল আরো ১৬ রান। ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা এই দুই লংকান ওপেনারের তাণ্ডব চলল পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। অমন ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর ম্যাচের আর কী বাকি থাকে! ম্যাচ ১৯তম ওভার পর্যন্ত গড়ানোর কৃতিত্ব বাংলাদেশি বোলারদের দেয়ার চেয়ে শ্রীলংকার মিডল অর্ডার ব্যাটারদের দেয়াই শ্রেয়। কুশাল মেন্ডিসের ৫১ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে এক ওভার হাতে রেখে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রানের লক্ষ্য টপকে গেল শ্রীলংকা। সিরিজ শুরু হলো ৭ উইকেটের জয়ে। 

ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে পাওয়ারপ্লেতে যেভাবে নিসাঙ্কা-কুশালের ব্যাট চলেছে, তাতে ১৫৫ রানের লক্ষ্যকেও মামুলি মনে হচ্ছিল। ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ওপেনিং জুটিতে দুজন মাত্র ২৮ বলে তুলেছেন ৭৮ রান। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে নিসাঙ্কার টপ এজে ক্যাচ না উঠলে এই জুটি কোথায় থামত কে জানে! তবুও পাওয়ারপ্লেতে শ্রীলংকা তুলল ৮৩ রান, যা নিজেদের ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ। নিসাঙ্কা-কুশালের ঝড় থামাতে টানা বোলার বদল করে গেছেন অধিনায়ক লিটন।

প্রথম সাত ওভার করাতে ব্যবহার করেছেন পাঁচজন বোলার। তাতে অবশ্য দুই লংকান ওপেনারের থোড়াই কেয়ার! তাসকিন-তানজিম-সাইফউদ্দিন; কেউই থামাতে পারেননি তাদের লংকাকান্ড। তৃতীয় ওভারে তানজিম সাকিব দিয়েছেন ১৬, এক ওভার পর তাসকিন ফিরে আবার পড়েছেন কুশালের ঝড়ে। দুই ছক্কা, এক চারে দিয়েছেন ১৮। সেকেন্ড চেঞ্জ হিসেবে মিরাজও বোলিং শুরু করেছেন নিসাঙ্কার কাছে দুই ছক্কা খেয়ে। অবশ্য দ্বিতীয় ছক্কাটা খাওয়ার পরের বলেই পেয়েছেন তার উইকেট।

এরপরই একটু থেমে আসে শ্রীলংকার রান তোলার গতি। তাও তিনে নামা কুশাল পেরেরা একটু দেখেশুনে খেলেছেন বলে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪২ রান করতে দুই কুশাল মিলে বল খেলেছেন ৪৯টি। সেটাই বরং অবাক করেছে। অবশ্য মাঝের এই ধীরগতির ব্যাটিংয়ের সময় নিজের দ্বিতীয় ওভারে দারুণ এক গুগলিতে কুশাল পেরেরার উইকেটটা পেয়েছেন রিশাদ হোসেন। বোলারদের ওপর ঝড়ঝাপটা বয়ে যাওয়ার দিনে সবচেয়ে শুকনো শরীরে মাঠ ছেড়েছেন এই লেগস্পিনারই। চার ওভার বল করে খরচ করেছেন ২৪ রান। 

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের উদ্দেশ্যবিহীন ব্যাটিং এপ্রোচে ৫ উইকেটে সাদামাটা ১৫৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। পারভেজ ইমন ২২ বলে ৩৮ করে উইকেট রীতিমতো উপহার দিয়েছেন মাহিশ থিকশানাকে। এর আগে আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম সেই থিকশানাকে ক্যাচ প্র‍্যাকটিস করিয়ে ফিরলেন ১৬ রানে, নুয়ান থুসারার বলে। 

ব্যর্থ লিটন ফিরেছেন ৬ রানে, জেফ্রি ভ্যান্ডারসেকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর হয়ে। দাসুন শানাকার অফ স্টাম্পের বাইরে পাতা স্লোয়ারের ফাঁদে পা দিয়ে আউট হয়েছেন তাওহিদ হ্রদয়। ডট বলের চাপে পড়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন ১০ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটার। 

তিন বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফেরা নাঈম শেখের ওয়ানডে ছন্দের ব্যাটিং দলের পক্ষে ঠিক কতটা কাজে এসেছে সেটা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। উইকেটে যেন হাঁসফাঁস করেছেন তিনি, বলের গতির তারতম্যর সাথে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারেননি। তবে মিরাজের সাথে গড়েছেন ৪৬ রানের জুটি। আর শেষ দিকে শামীমের পাঁচ বলে ১৪ রানের ইনিংসে দলের সংগ্রহ পেরিয়েছে দেড়শো রানের কোটা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *