আওয়ামী লীগের সহযোগী অভিযোগ দিয়ে জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
শনিবার রাজধানীর গুলশানে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টিকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র নতুন নয়। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে কোনো দিন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘এমন নির্বাচন করবেন না, যেখানে আরেকটি ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে। সংবিধান মানলে এখন পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’
জাতীয় পার্টির ইতিহাসে ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কখনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন না। ১৯৯০ সালে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে মহাজোট করার পরও একই ঘটনা ঘটে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তবে সেই অপরাধের ভাগীদার অন্যরাও। কারণ, তারা ওই নির্বাচিত সরকারের অধীনে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘জাতির জীবনে আমরা সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছি। ৫ আগস্ট আমাদের জীবনে তাৎপর্যপূর্ণ দিন। আন্দোলনকারীরা একে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলছেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলব, একাত্তরের সঙ্গে এর তুলনা করা উচিত নয়।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একটি নির্বাচনী টাইম ফ্রেম ঘোষণা করেছেন। নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে বাজারে নানা আলোচনা চলছে। হাট-বাজার দখল হয়ে গেছে। সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু সংস্কার কাগজের পাতাতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। পরবর্তী সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপরই নির্ভর করছে সংস্কার বাস্তবায়ন হবে কি না। জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনো সংস্কারে ইতিহাস সৃষ্টি সম্ভব নয়।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, সাবেক সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনা, লিয়াকত হোসেন খোকা, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মোবারক হোসেন আজাদ, দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান প্রমুখ।
এর আগে, গত ৯ আগস্ট গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে এক তরফা কাউন্সিলের মাধ্যমে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একাংশ আত্মপ্রকাশ করে। এরও আগে, ২০২৪ সালের ৯ মার্চ একইভাবে এক তরফা কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি (রওশন) গ্রুপ আত্মপ্রকাশ করেছিল।