দুর্গাপূজা ঘিরে যেন কোনো ষড়যন্ত্র না হয়: প্রধান উপদেষ্টা

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

আসন্ন দুর্গাপূর্জা ঘিরে দেশের কোথাও যেন কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে আলাপে এ আহ্বান জানান তিনি।

সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সবসময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হওয়ার, কথা বলার সুযোগ হয়।’

এসময় তাদের কাছে পূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামন্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজা মন্ডপ বেড়েছে। সারাদেশে পূজা মন্ডপ প্রস্তুতের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

তারা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল পক্ষ থেকে এবারের পূজায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান তারা।

ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন বলেও প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়।

এসময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এজন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গতবছরের মতো এবছরও পূজায় আমরা দুদিন ছুটি পেয়েছি। এজন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেছিলেন। বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সাথে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সকলে সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’

মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন উল্লেখ করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল মানুষের কল্যাণ হবে আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সকল ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাআনন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্না রায় দাস, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *