শেষ দিকে সাকিবের লড়াই ব্যর্থ, পাকিস্তানের সিরিজ জয় নিশ্চিত
দ্বিতীয় ম্যাচেও একই চিত্র। ব্যাটিং ব্যর্থতা, দুর্বল পরিকল্পনা এবং চোটে জর্জরিত বাংলাদেশ আবারও ২০২ রানের টার্গেট টপকাতে ব্যর্থ। লাহোরে শুক্রবার ৫৭ রানে হার মানে টাইগারদের, ফলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় স্বাগতিক পাকিস্তান।
২০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ১৯ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে মাত্র ১৪৪ রান। অথচ দলের সর্বোচ্চ রানটা এল ৯ নম্বরে নামা পেসার তানজিম হাসান সাকিবের ব্যাট থেকে—৩১ বলে ৫০ রান করে একাই কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন তিনি।
চোটের কারণে ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামতেই পারেননি শরিফুল ইসলাম। ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই বোলিং করার সময় গ্রোইন ইনজুরিতে পড়েন এই বাঁহাতি পেসার।
শুরুর দিকে কিছুটা আশা জাগালেও বারবার সেই পুরনো ভুল। তানজিদ তামিম দ্বিতীয় ম্যাচেও ঝলক দেখিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন। ১৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে ছিল আগ্রাসন, কিন্তু ইনিংসটা এগোতে দেননি নিজেই। মেহেদি হাসান মিরাজ করেন ২৩ রান। বাকিরা যেন আসা-যাওয়ার মাঝে থেকে গেলেন—আর কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।
পাকিস্তানের বোলাররা ছিলেন দারুণ নিয়ন্ত্রিত। লেগ স্পিনার আব্রার আহমেদ ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দারুণ প্রভাব ফেলেন। সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ আমির ও আব্বাস আফ্রিদি, যারা মাঝের ওভারগুলোয় চাপ ধরে রাখেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান করে ২০১ রান ৬ উইকেটে। শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান—৪১ বলে ৭৪ রান, যেখানে ছিল ৬টি ছক্কা ও ৪টি চার। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস এটিই।
য়ারেক ওপেনার সাইম আয়ুব দ্রুত আউট হলেও, এরপর ফারহান ও মোহাম্মদ হারিস গড়েন ১০৩ রানের ঝড়ো জুটি, মাত্র ৫৪ বলে। হারিস করেন ২৫ বলে ৪১ রান।
১২তম ওভারে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে রিশাদ হোসেনের বলে আউট হন ফারহান। এরপর ইনিংসের শেষ দিকে ধ্বংস চালান হাসান নওয়াজ—২৬ বলে অপরাজিত ৫১ রান, যার মাঝে ছিল ৩টি ছক্কা ও ২টি চার।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তানজিম সাকিব ৩৬ রানে ২টি উইকেট নেন। হাসান মাহমুদ পান ২ উইকেট, তবে খরচ করেন ৪৭ রান। সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছিলেন রিশাদ হোসেন—১ উইকেটের জন্য দিতে হয়েছে ৫০ রান।
ম্যাচের শুরুর দিকেই শরিফুল ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন। তার ওভার শেষ করতে হয় শামিম হোসেনকে।
এই সিরিজে পরপর দুই ম্যাচেই ২০২ রান তাড়া করে হারল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে হেরেছিল ৩৭ রানে। আজকের হার দিয়ে সিরিজও গেল হাতছাড়া। আগামী রোববার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি এখন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
বাংলাদেশের ব্যাটিং মেলে না, বোলিংয়ে ধার নেই, ইনজুরি ও দিকভ্রান্ত পরিকল্পনায় ছন্নছাড়া দল। এই সিরিজ থেকে শিক্ষা না নিলে, ভবিষ্যতের পথ আরও কঠিনই হতে যাচ্ছে টাইগারদের জন্য।