থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে দেশটির রাজধানী ব্যাংককে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। । সম্প্রতি কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁসের পর এই আন্দোলন শুরু হয়।
ফাঁস হওয়া অডিওতে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা হুন সেনকে ‘কাকা’ সম্বোধন করেন। সেই সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িত এক থাই সামরিক বাহিনীর অফিসার সম্পর্কে ‘বাহাদুরি দেখাতে গিয়েছে, অকাজের’ এমন মন্তব্য করেন।
সিনাওয়াত্রার এমন মন্তব্যকে হুন সেনের প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ হিসেবে দেখছে জনগণ। এছাড়া থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললেই চলে, কারণ দেশটির সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে।
দেশটিতে ২০২৩ সালে ফিউ থাই দল ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ভারী বর্ষণের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ থাই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন। ৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন আগামী মাসের সম্ভাব্য অনাস্থা ভোটের আগে স্থবির অর্থনীতি চাঙা করা এবং দুর্বল জোট সরকারের ঐক্য টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।
এ ঘটনায় পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, এটি ছিল ‘আলোচনার কৌশল’, তবে তিনি ভবিষ্যতে আর হুন সেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন না।
বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক পার্নথেপ পৌরপোংপান বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীই সমস্যার মূল, তাকে সরে যেতে হবে। থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যই এসেছি। থাইল্যান্ডের অনেকেই মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রভাবশালী বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছেন।’
গত মে মাসে সীমান্তের একটি বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে সর্বশেষ বিরোধ শুরু হয়। এরই মধ্যে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
ফাঁস হওয়া ফোন কলের ঘটনায় সাংবিধানিক আদালত এবং একটি জাতীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার কাছে সিনেটরদের একটি অংশ আবেদন করার পর, পেতংতার্ন বিচার বিভাগীয় তদন্তের মুখোমুখি হন। উভয় সংস্থার সিদ্ধান্তই তাকে অপসারণের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।