খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়া এলাকায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন। পুলিশের কারণে আলামত নষ্টের আশঙ্কার কথা জানায় সংগঠনটি।
বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ গণধর্ষন ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নাসরিন সিরাজ। রূপসী চাকমার সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি সদস্য ফেরদৌস আরা রুমী, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সভাপতি অমল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের অর্থ সম্পাদক স্কাইয়া ইসলাম ও এডভোকেট ইশরাত জাহান।
নেতৃবৃন্দ জানান, গত ২৭ জুন রথযাত্রা উৎসব শেষে ভাইবোনছড়া বাজার এলাকায় এক আত্মীয়ের মেসে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্কুলছাত্রী। সেখানে ছয়জন বাঙালি সেটলার কর্তৃক উক্ত ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা তাকে এবং তার আত্মীয়কে হুমকি দিয়ে ভিডিও করে এবং সামাজিকভাবে হেনস্থা করার ভয় দেখান।
এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ চার অভিযুক্ত আরমান হোসেন, ইমন হোসেন, এনায়েত হোসেন ও সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। মামলার দুই আসামি এখনও পলাতক। আসামিরা সকলেই একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ফলে তারা ভিকটিম ও তার স্বজনদের নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
নেতৃবৃন্দ আরও জানান, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের সময় অবহেলার কারণে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষায় বিলম্ব ঘটে, যার ফলে মেডিকেল রিপোর্টে প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ভয়, লজ্জা ও সামাজিক চাপের কারণে ছাত্রীটি ইতিমধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগের কার্যকর তদন্ত শুরু করেনি পুলিশ। ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসা ও মেডিকেল পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
হিল উইমেন্স ফেডারেশন পার্বত্য অঞ্চলে নারী সহিংসতা প্রতিরোধে কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরে। তার মধ্যে রয়েছে- পার্বত্য জেলাগুলোতে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা, যৌন সহিংসতার শিকারদের জন্য সুষ্ঠূ তদন্ত ও আইনি সহায়তা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা হস্তক্ষেপ বন্ধ ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা।