দেশের মাটিতে টানা ৬ টেস্ট হারার পর জয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। বুধবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানে চট্টগ্রাম টেস্ট জিতে বাংলাদেশ দুই টেস্টের সিরিজ শেষ করল সমতায়।
বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের এ জয়ে বড় অবদান রেখেছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই নিভিয়ে দেন জিম্বাবুয়ের আশার আলো। আবার দুই ইনিংসে ৯ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলামের অবদানও কম নয়। ওপেনার সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিও চট্টগ্রামের টেস্ট জয়কে করেছে সহজসাধ্য।
চট্টগ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। জবাবে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে সাদমান ও মিরাজের সেঞ্চুরিতে ৪৪৪ রান করে। ২১৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১১১ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ফলে ইনিংস এবং ১০৬ রানের ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।
টেস্টের তৃতীয় দিনে বড় টার্গেট মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস ওপেন করেন প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারকে নতুন বলে খেলতে গিয়ে হিমশিম খায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। ইনিংসের ৭ম ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল। এই স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন ব্রায়ান বেনেট। তবে আউট সাইড এজে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সাদমান ইসলাম সহজেই তালুবন্দি করেন। ৬ রান করে এই ওপেনার ফেরায় ৮ রানেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
দুই বল পরই আবার আঘাত হানেন তাইজুল। এবার তার শিকার নিক ওয়েলচ। বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাবে ভেবে তিনি বল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবে আঘাত হানে তার প্যাডে। এতে লেগ বিফোরের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ, তাতে সিদ্ধান্ত বদলে যায়। এরপর ১১তম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসেই উইকেটের দেখা পান নাঈম ইসলাম। এই অফ স্পিনারের টার্ন পড়তে পারেননি শন উইলিয়ামস। এ পর্যায়ে ২২ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর ক্রেগ আরভিন ও বেন কারান মিলে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। বড় হতে যাওয়া সেই জুটি ভেঙেছেন মিরাজ। আরভিনকে ৩০তম ওভারের প্রথম বলে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বোল্ড করেন মিরাজ। এরপর মিরাজের জয়যাত্রা থামেনি। ওভারের শেষ বলে ওয়েসলি মাদেভারেকেও সাজঘরে ফেরান এই অফ স্পিনার। নিজের পরের ওভারেও উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। তাফাদা সিগা এনামুল বিজয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। এরপর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এবং বেন কারানকে ফিরিয়ে ইনিংসে ফাইফার পূরণ করেন মিরাজ। তাতে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফাইফারের কৃতিত্ব দেখান এই অলরাউন্ডার।
শেষ বিকেলে ৪৩তম ওভারে রিচার্ড এনগারাভাকে ফেরান তাইজুল। আর শেষ ব্যাটার হিসেবে রান আউট হয়েছেন মাসাকেসা। তাতেই ৪৬.২ ওভারে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের লড়াই। ২১৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে জিম্বাবুয়ে করতে পেরেছে মাত্র ১১১ রান।
দ্বিতীয় টেস্টে সবমিলিয়ে ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করেছেন তাইজুল। আরেক স্পিনার মিরাজে পেয়েছেন ৫ উইকেট। এ ছাড়া নাঈম হাসান পেয়েছেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২২৭ ও ১১১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৪৪
ফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জয়ী।