ডাকসুতে সাইবার বুলিংয়ের বাধায় নারী প্রার্থীরা, বাড়ছে মানসিক চাপ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ডাকসু নির্বাচনের জোর প্রচার। ছবি: টাইমস
Highlights
  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সাইবার বুলিং রোধে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাময়িকভাবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ও পেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে প্রচরণার শুরুতেই নারী প্রার্থীরা শিকার হচ্ছেন ‘সাইবার বুলিং’-এর। আদ্যোপান্ত খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মো. আল আমিন সাদমান ও শাহেদুল ইসলাম। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনী প্রচারণায় মেয়ে প্রার্থীদের জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাইবার বুলিং বা অনলাইনে হয়রানি।

নারী প্রার্থীরা জানিয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত আপত্তিকর মন্তব্য, গুজব ও ব্যক্তিগত আক্রমণের কারণে তারা মানসিক চাপে ভুগছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতাও অনুভব করছেন তারা। এটি তাদের নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে ডাকসু নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল। ছবি: টাইমস

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সাইবার বুলিং রোধে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাময়িকভাবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ও পেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে প্রশাসনের তরফ থেকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চ’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-১’ এবং ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-২’ সহ কয়েকটি নির্দিষ্ট অনলাইন পেজ বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলন সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহমিদা আলম টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক গ্রুপগুলোতে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আমাদের টার্গেট করছে। তারা অনেক সময় ফেক আইডি ব্যবহার করছে। তারা আসলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। মূলত নারীদের হয়রানি ও মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা এসব করছে। এটি রোধ করা অত্যন্ত জরুরি।’

সামাজিক সেবা সম্পাদক পদপ্রার্থী সীমা আক্তারও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন। সোমবার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর শিবিরের প্যানেলের সদস্যরা। ছবি: জান্নাতুল ফেরদাউস/টাইমস
ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর শিবিরের প্যানেলের সদস্যরা। ছবি: জান্নাতুল ফেরদাউস/টাইমস

তিনি টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি জুলাই আন্দোলনে সামনের সারির কর্মী ছিলাম। এ কারণেই তারা আমাকে ভয় পায়। তারা আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিতে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে “ভার্চুয়াল মব” চালাচ্ছে। নির্বাচনে তারা আমাকে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পেরে অনলাইনে এই অস্ত্র ব্যবহার করছে। এমনটা শুধু আমার বিরুদ্ধে না, সকল নারী প্রার্থীর বিরুদ্ধেই হচ্ছে। কিন্তু তারা যতই আমাদের ভাঙার চেষ্টা করবে, আমরা ততই শক্তভাবে রুখে দাঁড়াব।’

নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আতিকা আনজুম অর্থী টাইমস অব বাংলাদেশকে সীমা আক্তার বলেন, ‘এ ধরনের মানসিক চাপ অনেক বেশি। সবাই এই চাপ সহ্য করতে পারে না। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। অনেকে ভাবতে পারেন, “আমি এসব সহ্য করবো কেন?” এই মানসিকতা থেকেই অনেক নারী অংশ নিতে চাইবেন না বা সরে দাঁড়াবেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ টাইমস অব বাংলাদেশকে জানান, ২৬ আগস্ট সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করব। প্রার্থীদের পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যকর সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *