ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলেও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প-পুতিন আসন্ন বৈঠককে স্বাগত জানাল দেশটি। আগামী ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এরইমধ্যে মস্কো-দিল্লির ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে একাধিকবার ভারত সরকারকে সতর্ক করেছে ওয়াশিংটন। তা আমলে নিয়েই এবার ট্রাম্প-পুতিন বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠকের বিষয়ে বিবৃতি দিল নয়াদিল্লি।
আনন্দবাজার ডটকম জানায়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ১৫ অগস্ট বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া যে সমঝোতায় পৌঁছেছে, তাকে ভারত স্বাগত জানাচ্ছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন সমস্যার সমাধান এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য পথ খুলে যেতে পারে বলেও মনে করছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একাধিকবার বার্তা দিয়েছেন সেটিও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনায় ‘অসন্তুষ্ট’ হয়ে সম্প্রতি ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। হুঁশিয়ারি বার্তায় তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিলে ভারতীয় পণ্যে শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।
এ হুমকি উপেক্ষা করেই মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করছে নয়াদিল্লি। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পুতিনকে নিজের ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোদী লেখেন, তারা দু’জনেই ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব বৃদ্ধির বিষয়েও কথা বলেছেন এই দুই নেতা।
শুধু তাই নয়, গত শুক্রবারই প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ডেনিস মানতুরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
এমন পরিস্থিতি ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের বিষয়ে ভারত সরকারের ওই বিবৃতিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব থাকলেও ভারতীয়দের স্বার্থের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সম্প্রতি বলেছেন, ভারত এখন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং কোনও ভাবেই মাথা নত করবে না।
কূটনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া প্রশ্নে ভারত ইতোমধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।