‘ট্যুর এক্সপার্ট’ গ্রুপের বর্ষা গ্রেপ্তার

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপের এডমিন বর্ষা ইসলাম। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

অনলাইনভিত্তিক ট্যুর গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্ট’-এর অ্যাডমিন বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বান্দরবানের আলীকদমে ট্র্যাকিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে এক নারী পর্যটকসহ দুজন নিহত ও একজন নিখোঁজের ঘটনায় করা একটি মামলায় শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহত নারী পর্যটক স্মৃতি আক্তারের বাবা হাবিবুর রহমান এ মামলা করেন।

আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৪(ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কেউ অবহেলা বা অসাবধানতার কারণে কারো মৃত্যুর কারণ ঘটায়, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’

গ্রেপ্তার বর্ষা ইসলাম যশোর জেলার চৌগাছা থানার জগদীশপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলামের কন্যা।

এজাহারে বলা হয়েছে, বর্ষা ইসলাম তার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্যুরের আয়োজন করতেন। এক্ষেত্রে তিনি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করেছেন। তার ‘ক্রিসতং রুংরাং সামিট (৩০ তম)’ ইভেন্টে অংশ নিতে গিয়ে স্মৃতি আক্তার গত ৮ জুন আলীকদমের উদ্দেশে ঢাকার রামপুরা থেকে রওনা হন। পরিবারের সঙ্গে এরপর তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে ১৩ জুন আলীকদমের তৈন খালের মোড় থেকে স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্ষা ইসলাম স্থানীয় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে মাত্র একজন গাইড (সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা) নিয়ে ৩৩ জনের ট্যুর আয়োজন করেন। তিনি পর্যটকদের আবহাওয়া সম্পর্কে জানাননি। ৯ জুন তারা দুর্গম রুংরাং-ক্রিসতং এলাকার উদ্দেশে রওনা হন। পরদিন দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে ১২ জন পর্যটক ও গাইডকে নিয়ে বর্ষা খেমচং পাড়া থেকে আন্ধারমানিক ট্রেইলের উদ্দেশে যান। অন্যদিকে গাইড ছাড়াই স্মৃতি আক্তার, হাসান চৌধুরী শুভ এবং শেখ জুবাইরুল ইসলাম নামে ৩ পর্যটক রওনা হন আলীকদম সদরের দিকে। ১১ জুন বিকেলে কুরুকপাতা ইউনিয়নের শামুক ঝর্ণা এলাকায় প্রবল বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢল নামে। এতে নিখোঁজ হন তিন পর্যটক।

এরপর ১২ জুন মাতামুহুরী নদী থেকে শেখ জুবাইরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার হয়। পরদিন তৈন খালে পাওয়া যায় স্মৃতি আক্তারের মরদেহ। তাদের সঙ্গী হাসান চৌধুরী শুভ এখনো নিখোঁজ।

বাদীর দাবি, আয়োজক বর্ষা ইসলামের দায়িত্বে অবহেলা ও অদক্ষতার কারণেই স্মৃতি আক্তারের মৃত্যু হয়েছে।

বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে ট্যুর পরিচালনার ক্ষেত্রে অপারেটরদের আরও দক্ষ ও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটন সংস্থাগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *