জুলাইয়ে ‘জাতীয় সনদ’ চূড়ান্ত নিয়ে শঙ্কিত জামায়াত

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় সংলাপ কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিরতিতে জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ইউএনবি
Highlights
  • ‘যেহেতু এবার সময় কম, এর মধ্যে ভিন্ন কোনো চিন্তা করার সুযোগ নেই। সে জন্য ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে ইসি, তাদের সুপারিশক্রমে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের জাতীয় সনদ জুলাই মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ে এটি হবে কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। যদি আর কিছুটা সময় লাগে, তবুও ধৈর্য নিয়ে সংলাপ চালিয়ে যাওয়াই সঠিক পথ বলে আমরা মনে করি।’

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় সংলাপ কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিরতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মূল ৫ থেকে ৭টি বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে চাই। সব বিষয়ে না হলেও, অন্তত ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐক্য হবে বলে আমরা আশাবাদী। বাকি বিষয়গুলো সরকার ও কমিশন কৌশলে সমাধান করবে।’

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত জামায়াতের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘একজন ব্যক্তির সারাজীবনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ বছর—এ বিষয়ে আমরা একমত।’

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আগে নির্বাচন কমিশনই একান্তভাবে কাজটি করতো। এখন স্বচ্ছতার জন্য একটু পরিবর্তন আনার কথা বলা হচ্ছে। সেটা হচ্ছে, একটি বিশেষায়িত কমিটি হবে।’

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেই কমিটি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা ও সুপারিশ করবে। এটিকে দুভাবে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম হচ্ছে, সামনে যে জাতীয় নির্বাচনটি হবে, এতে আমাদের বা কমিশনের প্রস্তাব ছিল—একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হবে ইসির অধীনে, যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এবার সময় কম, এর মধ্যে ভিন্ন কোনো চিন্তা করার সুযোগ নেই। সে জন্য ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে ইসি, তাদের সুপারিশক্রমে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হবে।’

স্বচ্ছ, সুন্দর ও সঠিকভাবে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করার জন্য এটি খুবই জরুরি বিষয়। কারণ, এটার কারণে নির্বাচনের ফল ভিন্ন হয়ে যায় অনেক সময়, বলেন তিনি।

মো তাহের বলেন, ‘সীমানা নির্ধারণের জন্য অনেকগুলো বিশেষজ্ঞের কাজ করতে হয়। জরিপের কাজ, ভৌগোলিক অঞ্চলকে সমন্বয়, ভোটের আনুপাতিক দিকগুলো আছে—এমন অনেক বিষয়ে। সবকিছু বিবেচনা করে এটি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে।’

আর স্থায়ীভাবে আরেকটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি, সংবিধানে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির বিষয়ে উল্লেখ থাকবে। আদমশুমারির পরপরই সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকবে। তারা একটি সাংবিধানিক কমিটি হিসেবে কাজ করবে, সংবিধানে তাদের কথা উল্লেখ থাকবে।’

জামায়াতের এই নায়েবে আমীর আরও বলেন, এই কমিটি স্বাধীন হবে। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে এটি গঠিত হবে। কমিশন প্রস্তাব করেছিল—এটির নামের শেষে কমিশন হবে। এ নিয়ে অনেকে আবার আপত্তি করেন। যে কারণে, নামের শেষে কমিটি দিয়েই সবাই ঐকমত্য হয়েছি।’

বৈঠকের শুরুতে জাতীয় সংলাপ কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জুলাইয়ের মধ্যভাগেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হতে পারে।

বুধবারের এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *