জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হলেও নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫ পদ ও হল সংসদের ৩১৫ পদে মোট ৬২২ জন প্রার্থী লড়ছেন। এর মধ্যে ৪৪৯ জন পুরুষ এবং ১৭৩ জন নারী।
কেন্দ্রীয় সংসদে ১৭৯ প্রার্থীর মধ্যে ১৩৩ জন পুরুষ ও ৪৬ জন নারী। তবে সহসভাপতিসহ (ভিপি) পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কোনো নারীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। যদিও ছয়টি পদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত, তবুও সামগ্রিকভাবে নারী প্রার্থীর সংখ্যা কম। প্রায় অর্ধেক ভোটার নারী হলেও প্রার্থিতায় তাদের উপস্থিতি সীমিত।
হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও কম। নারীদের ১০ হলের ১৫০ আসনের মধ্যে ৫৯টি শূন্য এবং ৬৫টিতে একক প্রার্থী থাকায় জয় নিশ্চিত। সব মিলিয়ে ১৩১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না এবং ৬৮টি আসন শূন্য থাকবে। অন্তত পাঁচটি হলে কোনো প্রার্থীই পাওয়া যায়নি। নওয়াব ফয়জুন্নেসা, সুফিয়া কামাল ও বেগম খালেদা জিয়া হলে সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী নেই।
কেন্দ্রীয় সংসদের পদেও নারী প্রার্থীর ঘাটতি রয়েছে। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নয়জন প্রার্থীর মধ্যে দুইজন নারী থাকলেও সহসভাপতি পদে ১০ জনের মধ্যে কেউ নেই। সাহিত্য, প্রকাশনা, ক্রীড়া, তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবহন সম্পাদক পদেও কোনো নারী মনোনয়ন নেননি।
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং হল সংসদের প্রার্থী নুহা বলেন, ‘জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ একেবারে কম। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা বাধা রয়েছে। বিচারভীতির পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক ধ্যানধারণা, নিরাপত্তা, পরিবার ও সহপাঠীর প্রভাবও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’
এবার সাতটি প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে শীর্ষ পদে নারীর উপস্থিতি সীমিত। কেবল ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে তানজিলা হোসেন বৈশাখী সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য সব প্যানেলে সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুরুষ প্রার্থীরা লড়ছেন। নারীরা মূলত সংরক্ষিত পদেই সীমাবদ্ধ।
ছেলেদের ১১ হলের ১৬৫ আসনের মধ্যে ৬৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং নয়টি আসন শূন্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে একটি আসন শূন্য, শহীদ সালাম-বরকত হলে নয়টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এবং দুটি আসন শূন্য। আল-বেরুনী হলে পাঁচটি আসনে একক প্রার্থী ও চারটি শূন্য। এ এফ এম কামালউদ্দিন হলে আটটি, মাওলানা ভাসানী হলে ছয়টি, ১০ নম্বর হলে ছয়টি, মীর মোশাররফ হলে পাঁচটি, শহীদ রফিক-জব্বার হলে ছয়টি, ২১ নম্বর হলে পাঁচটি এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে চারটি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিশ্চিত হয়েছে।