ঝিনাইদহের সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় খালবিলগুলো দখল করে নিচ্ছে নিষিদ্ধ ‘চায়না দুয়ারি জাল’। দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরার এই অনিয়ন্ত্রিত প্রবণতায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই অঞ্চলের আদিবাসী বাগদি সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬০টি আদিবাসী পরিবারের মূল জীবিকা জলাশয় থেকে মাছ ধরা। তারা বছরের বিভিন্ন সময় বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে দেশীয় মাছ সংগ্রহ করেন সনাতন পদ্ধতিতে। কিন্তু এই জালের আগ্রাসনে তারা আর খালবিল থেকে মাছ তুলতে পারছেন না।
কুঠিদুর্গাপুর গ্রামের মৎস্যজীবী রবিন বলেন, ‘নতুন পানিতে মাছেরা ডিম ছাড়ে, বংশ বাড়ায়। অথচ এই মৌসুমেই চায়না দুয়ারি জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মাছ ধরা হচ্ছে। ভবিষ্যতে মাছই থাকবে না, তখন আমরা বাঁচব কীভাবে?’
আরেক মৎস্যজীবী শ্যামল বলেন, ‘আমরা কারেন্ট জাল বা চায়না দুয়ারি ব্যবহার করি না। সনাতন পদ্ধতিতে মাছ ধরি। কিন্তু সরকার নিষিদ্ধ করলেও বাস্তবে কেউ মানছে না। ফলে দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। জীবিকা নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা।’
একই রকম উদ্বেগ জানিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের ইমন হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে দেশি মাছের পেটে ডিম থাকে। অথচ এই জালে ওগুলোই ধরা পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশি মাছ চিনবেই না।’
সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘আমরা চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার সম্পর্কে অবগত। শিগগিরই এসব এলাকায় অভিযান চালানো হবে।’
চায়না দুয়ারি জাল সাধারণত পাতলা ও একাধিক স্তরবিশিষ্ট হয়, যার ফাঁদে পোনা, ডিমওয়ালা মাছ থেকে শুরু করে সবই আটকে পড়ে।