‘ঘুষ’হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের থেকে ঢাকার গুলশানে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে আবারও তলব করেছে দুদক।
এবার ঢাকার পাঁচটি ঠিকানায় চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি স্থানীয় থানাগুলোতেও চিঠি পাঠিয়ে তাকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার টিউলিপের ঢাকার মোহাম্মদপুর জনতা হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড, ঢাকার ধানমন্ডির দুটি ঠিকানা ও গুলশানের দুটি ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এসব চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা ও রেজিস্ট্রি ডাকের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে, পাশাপাশি দুদক কর্মকর্তারা সরাসরি গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকানাগুলোর প্রকাশ্য স্থানে চিঠিগুলো ঝুলিয়ে এসেছেন।’
সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে এ বিষয়ে আপনার কোনো বক্তব্য নেই বলে গণ্য করা হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।
এর আগে ১৪ মে টিউলিপকে ডেকেছিল দুদক। তবে সেই তলবি চিঠি পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ করছেন তিনি।
দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করার আশায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরে তার সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন টিউলিপ। টিউলিপের চায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দেননি ইউনূস।
এর আগে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ইউনূস বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তিনি সাক্ষাৎ দেবেন না।
এ বছরের ১৫ এপ্রিল ঢাকার গুলশানের একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুষ’হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড থেকে ৭১ নম্বর রোডের ১১এ, ১১বি ফ্ল্যাটটি (পুরনো ঠিকানা- ফ্ল্যাট নম্বর বি/২০১, বাড়ি নম্বর ৫এ ও ৫বি) কোনো টাকা পরিশোধ না করেই তিনি নিয়েছেন। রেজিস্ট্রির মাধ্যমে মালিকানা গ্রহণে টিউলিপকে ‘সহযোগিতা করা হয়েছে’ বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
টিউলিপ ছাড়াও রাজউকের দুই কর্মকর্তাকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম। আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের ‘যোগসাজশে’ এবং ‘ক্ষমতার অপব্যবহা’ করে ‘অবৈধ সুবিধা’নেওয়ার অভিযোগ করা হয় সেখানে।
এর আগে ১৩ এপ্রিল ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।