গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা অনুমোদনের পর ইসরায়েল তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা ঘিরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ একাধিক দেশ যৌথ বিবৃতিতে পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে।
রোববারের বৈঠকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ ইয়েনচা সতর্ক করে বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গাজায় আরেকটি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে, যা আরও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনবে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, গাজা দখলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের বড় ধরনের লঙ্ঘন। এর আগে সক্রিয় কূটনীতির মাধ্যমে হামাসের হাত থেকে ১৪০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল, অথচ এখন ইসরায়েল সহিংসতা বাড়ানোর পথ বেছে নিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আগে আর কত ফিলিস্তিনির প্রাণ যাবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ফু বলেন, গাজার পরিস্থিতি দ্রুত বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে। তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানান, গাজা দখলের যেকোনো প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়াতে এবং ইসরায়েলের নতুন অভিযানের নিন্দা জানাতে।
স্পেন, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নরওয়ে, পর্তুগাল ও স্লোভেনিয়াও যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
অন্যদিকে নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে হামাসের প্রচারণার শিকার বলে অভিযুক্ত করেন। গাজায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ছবি ‘ভুয়া’ দাবি করলেও তিনি জানান, দুই দিনের জন্য বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শনিবার থেকে অনাহার ও অপুষ্টিতে গাজায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, এতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭। ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে প্রাণ গেছে ৬১ হাজারের বেশি মানুষের।