যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বিমান থেকে ‘প্যারাসুটের সাহায্যে ত্রাণ সহায়তা’ (এয়ার ড্রপ) বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। গাজা শহর দখলে চলমান পূর্ণমাত্রার অভিযানের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। সেই সঙ্গে আরও বড় পরিসরে সামরিক অভিযান শুরুর আগে গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশও সীমিত করা হবে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সতর্কবার্তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ক্রস জানিয়েছে, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা গাজায় মানবিক সহায়তা আরও সীমিত করা হলে বিপর্যয় নেমে আসবে।
রেড ক্রস বলছে, ‘ইসরায়েল গাজার লাখ লাখ বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করে শহরটি দখলে নেওয়ার যে পরিকল্পনা করছে, তা বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে “অসম্ভব”। বাস্তুচ্যুত লাখো গাজাবাসীর কাছে নতুন করে অন্য কোথাও আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই। গোটা গাজাই বিধ্বস্ত এবং ক্ষুধায় কাঁদছে।’
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের মাত্রা বেড়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার একদিনেই ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
শহরের আল-নাসর সড়কে এক হামলায় ছয় শিশুসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। তারা সবাই ত্রাণ সহায়তা নিতে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।

অন্যদিকে, হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে আনতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে নেমেছে জিম্মিদের পরিবার। তাদের সমর্থনে রাজধানী তেল আবিবের রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পতনের দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে দেশটির জনগণ। বিক্ষোভকারীরা সরকারকে ‘যুদ্ধ না বাড়িয়ে’ যুদ্ধবিরতির পথ বেছে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
দুই সপ্তাহ আগে, হামাস ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এতে ১০ জন জীবিত ও ১৮ জন মৃত জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েল থেকে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দাবি করেছে।
তবে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যাবিনেট এখনো প্রস্তাবটি আলোচনা করেনি।
এতে ক্ষোভ জানিয়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার ফোরাম বলছে, ‘এটি যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া বানচালের চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।’
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হুঁশিয়ার করে এক জিম্মির মা বলেন, ‘আমার ছেলের মরদেহ যদি ফিরে আসে, আপনাকে “পরিকল্পিত হত্যার” অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’