বাংলাদেশ-শ্রীলংকার গল টেস্টের উইকেটে বোলারদের জন্য কী ছিল? প্রথম তিন দিনের কথা বললে কিছুই ছিল না। স্পিন ফ্রেন্ডলি ভেন্যু হিসেবে পরিচিত গলে স্পিন ধরার কথা তৃতীয় দিন থেকেই। কিন্তু এই টেস্টে উইকেটে ভাঙন ধরতে একদিন দেরিই হয়ে গেল। স্পিনাররাও তাই দেরিতেই ভেলকি দেখালেন, যার শুরুটা হলো নাঈম হাসানের জাদুতে।
গল টেস্টে শ্রীলংকার লিড নেয়া যখন কেবল সময়ের অপেক্ষা মনে হচ্ছিল, তখনই স্পিন জাদু নিয়ে হাজির হলেন ৬ ফুট উচ্চতার নাঈম। উচ্চতার কারণে পাওয়া এক্সট্রা বাউন্স আর টার্নের মিশেলে লঙ্কার লেজ একাই গুটিয়ে দিলেন এই অফস্পিনার। দেশের বাইরে প্রথমবার বল করতে নেমে পেলেন পাঁচ উইকেট। বিদেশে এর আগেও একটা টেস্টের একাদশে থাকলেও মাথায় আঘাত পেয়ে বল করতে পারেননি। সব মিলিয়ে চতুর্থবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন, শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিতীয়বার।
পাঁচ উইকেট পেয়ে সিজদা করলেন, সতীর্থরা ঘিরে ধরল। মাঠ ছাড়লেন ম্যাচ বলটা হাতে নিয়ে, দলের বাকি সবাই তার পেছনে। অ্যাওয়ে টেস্টে সুযোগ না পাওয়া এক স্পিনারের জন্য তো স্বপ্নের দিনই বটে।
চতুর্থ দিন শ্রীলংকা লাঞ্চে ব্রেকে গিয়েছিল বাংলাদেশের চেয়ে মাত্র ৩০ রানে পিছিয়ে থেকে। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই দেখল উল্টো ছবি। পঞ্চম ফিফটি পাওয়া কামিন্দু মেন্ডিসকে নাঈম ফেরালেন দারুণ এক ডেলিভারিতে। এরাউন্ড দ্য উইকেটে মিডল আর অফ স্টাম্প লাইনে বল পেয়ে কামিন্দু বেরিয়ে এলেন ঠিকই, কিন্তু আচমকা বাউন্সে শেষ পর্যন্ত ক্যাচ দেন লিটনের হাতে।
একই ওভারের শেষ বলে নাঈমের হাত থেকে বের হলো ক্লাসিক অফস্পিনার ডেলিভারি। গুড লেংথে একটু জোরের ওপর করা বল ব্যাট-প্যাড ফাঁকি দিয়ে ভেঙে দেয় থারিন্দু রথনায়েকের স্টাম্প। শেষটাও করেছেন স্টাম্প উড়িয়েই। নাঈমের পঞ্চম শিকার রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হওয়া আসিথা ফার্নান্দো।
অবশ্য চতুর্থ দিন শ্রীলংকার প্রথম ইনিংসের শেষের শুরুটা হয়েছিল হাসান মাহমুদের ছোঁয়ায়। আর দেশের বাইরে প্রথমবার পাঁচ উইকেট নেয়ার পথে নাঈমের প্রথম উইকেট ছিলেন দীনেশ চান্দিমাল।