ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে প্রকাশ্যে একজন নারী প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে আলী হুসেনকে অবশেষে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন।
ঢাবি’র জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বুধবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিটকারী ছাত্রীকে আলী হুসেন নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠলে সর্বত্র শুরু হয় তোলপাড়। ছাত্র-শিক্ষক ও সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় এনে তদন্ত দাবি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাদা দল এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন। মঙ্গলবারই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যবিশিষ্ট এবং ডাকসু নির্বাচন কমিশন দুই সদস্যবিশিষ্ট পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে বলে এক সংবাদ সম্মেলনের জানানো হয়।
ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকির ঘটনা তদন্তে ওই তদন্ত কমিটি করার কথা জানান।
এমন আবহে ঢাবি কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত আলী হুসেনকে বহিষ্কার করল।
ঢাবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০ ২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের আলোকে তাকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এটি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডারে প্রদত্ত প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তি। তার শ্রেণি রোল ৫৪ এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২০২০২১২৭৬৮। সে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী।’
‘একই সঙ্গে আলী হুসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিষয়ক কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে,’ জানানো হয় এতে।
এর আগে, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জের পর ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আলী হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারী প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ এবং ‘অপরাজেয় ৭১ অদম্য ২৪’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।