’গণতন্ত্রের উত্তরণ ব্যাহতে ষড়যন্ত্র থেমে নেই’

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হওয়ার পর নতুন একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ফ্যাসিবাদটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এই গণতন্ত্রের যেন উত্তরণ না ঘটে, তার জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এরা ফাঁদ পাতছে। আমাদের উসকানি দিচ্ছে, আমরা যেন ঝাঁপিয়ে পড়ি, প্রতিবাদ করি, সংঘাত করি, এমন একটা অবস্থা তৈরি করি, যেন গণতন্ত্রের উত্তরণটা ব্যাহত হয়। এই ফাঁদে পা দেব না।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। জুলাই–আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদদের স্মরণে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াতে, বিভিন্নভাবে কাজ শুরু হয়েছে। নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলা হচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়ে এসব করা হচ্ছে। তারা ভয় পেয়েছে। তারেক রহমান তো জাতীয় নেতা হিসেবে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন। সুতরাং তিনি যদি ফিরে আসেন, তাহলে তারা যাবে কোথায়। তাদের এটুকু আশ্বাস দিতে পারি, তারা সঠিক জায়গায় থাকবে।’

নির্বাচনের বিষয়টি ঠিক হওয়ার পরই গোলমাল শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমানের বৈঠকে নির্বাচনের কথা ঠিক হওয়ার পর গোলমালটা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু এ দেশের মানুষ বরাবরই সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, তারা তাদের দাবি আদায় করে নিয়েছে।’

দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক সাম্য তৈরি হোক, মানুষ তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক। সংস্কারের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা প্রায় একমত হয়েছি। আপনারা ধৈর্যহারা হবেন না। উত্তেজিত হবেন না। কখনো কোনো পাতা ফাঁদে পা দেবেন না।’

ফ্যাসিবাদ এখনো যায়নি উল্লেখ করে স্মরণসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, তাদের ভবিষ্যৎ নেই বলে নির্বাচন কীভাবে ঠেকানো যায়, সেই ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি কারও ফাঁদে পা দেবে না।

গোপালগঞ্জের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির রিজভী বলেন, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নির্বাচন হলে অনেকে জামানত হারাবে, তাই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।

এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খান রিপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান প্রমুখ।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন। সভার শুরুতে জুলাই–আগস্টে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *